
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলির কয়েকটি বুলেট এসে পড়ে বাংলাদেশ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ক্যাম্পে। পরে পুলিশ পাল্টা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রোববার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টা থেকে টানা দুই ঘণ্টা ধরে নয়াপাড়া মৌচনী রেজিস্টার্ড ক্যাম্প এলাকায় এই গোলাগুলি চলে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টেকনাফের নয়াপাড়া, মৌচনী, জাদিমুড়া ও লেদাসহ একাধিক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ক্যাম্প ঘেঁষা পাহাড়ি এলাকা থেকে মাঝেমধ্যেই গুলির শব্দ শোনা যায়। রোববার রাতের ঘটনায়ও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়, যা পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা সলিমুল্লাহ বলেন, “রাতে খাবার শেষে ঘুমিয়ে ছিলাম, হঠাৎ গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। পরিবারের সবাই জেগে ওঠে, ছোট বাচ্চারা কান্না শুরু করে। ভয়েই রাতটা কাটিয়েছি।”
নয়াপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজ মিয়া জানান, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে বাড়ি হওয়ায় সবসময় ভয় নিয়ে থাকি। সশস্ত্র রোহিঙ্গারা সুযোগ পেলে বাড়িতে ঢুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করে নিয়ে যায়। মাঝে মধ্যে দিন-রাত যেকোনো সময় ক্যাম্পে ও পাহাড়ে গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।”
তিনি আরও জানান, রোববার রাতে নুর কামাল, সাদ্দাম ও সালেহ গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। কয়েক ঘণ্টা ধরে ক্যাম্প ও আশপাশের পাহাড় থেকে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যায়।
এ বিষয়ে টেকনাফ ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. কাউছার সিকদার বলেন, “রোববার রাতে নয়াপাড়া মৌচনী ক্যাম্পসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় নুর কামাল, সাদ্দাম ও সালেহ গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ হয়। তাদের ছোড়া কয়েকটি গুলি এপিবিএন ক্যাম্পে এসে পড়ে। আমরা পাল্টা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।”
তিনি আরও বলেন, “সশস্ত্র এই গ্রুপগুলো পাহাড়ে অবস্থান করছে, ফলে তাদের গ্রেপ্তার করা কঠিন। তবুও এপিবিএন নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।”