
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ এবং চিকিৎসা ভাতা এক হাজার টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে প্রস্তাবটি অর্থবিভাগে পৌঁছেছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট আগেই জানিয়েছিল, তারা বাড়িভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার করার প্রস্তাব আশা করছে। জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে, শিক্ষকেরা আপাতত আন্দোলনে যাবেন না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ অনুবিভাগ) মো. মজিবর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা প্রস্তাব অর্থবিভাগে পাঠিয়েছি। অনুমোদন আসতে কিছু সময় লাগবে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “আমরা বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিয়েছি। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যদি সরকার পদক্ষেপ নেয়, আপাতত আন্দোলন স্থগিত থাকবে। ডিও লেটার না পাঠালে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার পর কর্মসূচি নেবো।
আগস্টের ১৩ তারিখ বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই জোট আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছিল। পূর্বে কর্মসূচিতে ছিল ১৪ সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ১২ অক্টোবর থেকে লাগাতার অবস্থান। সেইদিন সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পাঁচ দফা দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন বলেন, দেশে প্রায় ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক ও কর্মচারী কাজ করছেন। এছাড়া নতুন ১৮তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪১ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ সুপারিশ করা হয়েছে।
জাতীয়করণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে শিক্ষক সংগঠন ও জোট ২০২০ সালে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। শিক্ষক নেতা নজরুল ইসলাম রনি প্রস্তাবনায় উল্লেখ করেছেন, জাতির জনকের শিক্ষা দর্শন অনুযায়ী অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়িত হবে, সরকারের টেকসই উন্নয়ন সহজ হবে, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য দূর হবে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি নানা অসন্তোষ কমবে।
তবে গত সাড়ে চার বছরেও শিক্ষকদের দাবি পূর্ণরূপে মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ২০২৪ সালে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল ইসলাম নওফেল জানিয়েছেন, একবারে জাতীয়করণ সম্ভব নয়। তবে বাড়ি ভাড়া দুই দফায় শতভাগ বৃদ্ধি করা হবে। সফল হলে শিক্ষকদের মাঠে নামার প্রয়োজন হবে না।