
তুলা ও অন্যান্য টেক্সটাইল কাঁচামালের ওপর আরোপিত উৎসে কর (TDS) প্রত্যাহার করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনটিতে স্বাক্ষর করেন এনবিআরের করনীতি সদস্য এ কে এম বদিউল আলম।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আয়কর আইন ২০২৩-এর ধারা ৩৪৩ এবং উৎসে কর বিধিমালা ২০২৪-এর বিধি ৮ এর উপবিধির আলোকে, আমদানিকৃত কাঁচামালের ওপর উৎসে কর হার শূন্য শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
কর মওকুফের আওতায় রয়েছে তুলা, সিনথেটিক স্ট্যাপল ফাইবার, অ্যাক্রেলিক এবং আর্টিফিশিয়াল স্ট্যাপল ফাইবারসহ ৫২০১ থেকে ৫৫০৭ পর্যন্ত এইচএস কোডভুক্ত পণ্যসমূহ।
এবছরের শুরুতে তুলা আমদানিতে এনবিআর দুই শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আরোপ করায় টেক্সটাইল খাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শিল্প সংশ্লিষ্টরা দাবি করে আসছিলেন, এআইটি বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে এবং শিল্পের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) জানিয়েছে, তাদের ১,৮৫৮টি কারখানা দেশে তৈরি পোশাকশিল্পে ব্যবহৃত সুতা ও কাপড়ের প্রায় ৭০ শতাংশ সরবরাহ করে। খাতটিতে বিনিয়োগ প্রায় ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দীর্ঘদিন ধরেই তারা কাঁচামালে উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে স্পিনিং ও টেক্সটাইল মিলগুলোর কার্যকর মূলধনের চাপ কমবে, তারল্য বৃদ্ধি পাবে এবং খাতটির প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও মজবুত হবে।
এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সময়োপযোগী। এটি শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক স্নেহাশীষ বড়ুয়া মত দেন, “এটি শুধু একটি কর নীতির সংশোধন নয়, বরং এটি অর্থনীতির জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ, যা টেক্সটাইল খাতকে আরও শক্তিশালী ও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।”
বিটিএমএর মতে, রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানে কর অব্যাহতি থাকলেও ইনপুট ট্যাক্স বসানোর ফলে প্রকৃত আয়ের সঙ্গে করের অসামঞ্জস্য তৈরি হচ্ছিল। ফলে এআইটি প্রত্যাহার এই সমস্যার একটি দীর্ঘপ্রত্যাশিত সমাধান বলে তারা মনে করছে।