
বিদেশিদের জাল ভিসা আবেদন মোকাবিলায় ব্যাপক ক্ষমতা অর্জনের উদ্যোগ নিচ্ছে কানাডা সরকার। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশ ও ভারত থেকে পাঠানো কিছু ভিসা আবেদনে জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বিদেশিদের ভিসা গণহারে বাতিলের ক্ষমতা চায়।
কানাডার গণমাধ্যম সিবিসি নিউজ গত সোমবার জানায়, কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব বিভাগ (আইআরসিসি) এবং কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলে একটি বিশেষ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে। এর উদ্দেশ্য হলো জাল ভ্রমণ ভিসা আবেদন শনাক্ত করে তা বাতিল করা এবং এ সংক্রান্ত ক্ষমতা বাড়ানো।
সরকারি নথিপত্রে ভারত ও বাংলাদেশকে ‘নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জিং দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এসব দেশের আবেদন নিয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা দরকার। গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রেও এই দেশগুলোর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে প্রকাশ্যে কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী লেনা মেটলেইজ দিয়াব জানিয়েছেন, এ ধরনের ক্ষমতা কেবলমাত্র মহামারি বা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য চাওয়া হচ্ছে। তিনি কোনো নির্দিষ্ট দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিল সি-১২ নামে একটি প্রস্তাব কানাডার পার্লামেন্টে তোলা হয়েছে, যা দ্রুত পাসের আশায় রয়েছে সরকার। তবে এ বিল নিয়ে সুশীল সমাজে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ৩০টিরও বেশি মানবাধিকার ও অভিবাসী অধিকার সংগঠন, যার মধ্যে মাইগ্র্যান্ট রাইটস নেটওয়ার্কও রয়েছে, বলছে যে এই ক্ষমতা সরকারের হাতে গেলে তা “গণবহিষ্কারের যন্ত্র” হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। অনেক অভিবাসন আইনজীবীও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, আবেদন প্রক্রিয়ার জট কমাতেই কি সরকার এ ধরনের ক্ষমতা চাইছে না।
অন্যদিকে আইআরসিসি দাবি করেছে, “নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠী বা দেশের” লক্ষ্য করে এই প্রস্তাব করা হয়নি। বিভাগটি সিবিসি-কে জানিয়েছে, সীমান্তে অপ্রয়োজনীয় চাপ কমানো এবং ভুয়া পর্যটক ও অবৈধ পারাপার ঠেকাতে তারা “দৃঢ় পদক্ষেপ” নিয়েছে। তাদের মতে, অপব্যবহারের উচ্চ হার রয়েছে এমন দেশগুলোর অস্থায়ী রেসিডেন্স ভিসা (টিআরভি) আবেদন পর্যবেক্ষণ জোরদার করার ফলে গত বছরের জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে কানাডায় প্রবেশের হার ৯৭ শতাংশ কমে গেছে। একই সময়ে জালিয়াতির কারণে ভিসা বাতিলের হার বেড়েছে ২৫ শতাংশ।