
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ মঙ্গলবার রাতে একটি ওয়্যারলেস বার্তায় পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন, যদি কারো সামনে অস্ত্র বের হয়, তাহলে আত্মরক্ষার্থে বুকে, পিঠে বা মাথায় গুলি করতে হবে। এই তথ্য বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহমুদা বেগম নিশ্চিত করেছেন।
গত সোমবার বন্দর থানার ঈশান মিস্ত্রি হাট এলাকায় আওয়ামী লীগের এক মিছিলে হামলার সময় বন্দর থানার এসআই আবু সাঈদ রানাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ঘটনার প্রেক্ষাপটে এই সতর্কতামূলক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
সিএমপি কমিশনার পুলিশ সদস্যদের ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের অস্ত্র ও গোলাবারুদের ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, সেই অনুযায়ী থানার মোবাইল পার্টি, পেট্রোল পার্টি ও ডিবির টিমগুলো সকল র্যাংকের পুলিশকে অস্ত্র বহন করতে হবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া কেউ ডিউটিতে যাবে না।”
কমিশনার আরও জানান, “শুধু রাবার বুলেট দিয়ে কাজ হচ্ছে না। বন্দরে আমার এসআই গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেক ইঞ্চি দেরি হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতো। ওই পরিস্থিতিতে কেউ পড়লে, কোনো অবস্থাতেই প্রজেক্টাইল ছাড়া কেউ বেঁচে ফিরবে না।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “সোজা কথায়, পুলিশের টহল পার্টির সামনে কেউ অস্ত্র বের করলে গুলি করা হবে। সেটা আগ্নেয়াস্ত্র বা ধারালো অস্ত্র হতে পারে। অস্ত্র বের করার সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালানো হবে, এতে কোনো দেরি থাকবে না। দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ ধারার অধীনে পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার রাখেন। আক্রমণের আগেই বা অস্ত্র বের করার মুহূর্তেই গুলি করতে হবে, তা মাথায়, বুকে বা পিঠে হবে। সরকারি গুলির সর্বোচ্চ কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
এসআই আবু সাঈদ রানা এখনও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ জানায়, হামলার সময় তার সঙ্গে থাকা দুই কনস্টেবল শটগান বহন করলেও তা ব্যবহার করেননি। গুলিতে কারো মৃত্যু হলে পুলিশ সদস্যদের আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হয়, তাই অধিকাংশ পুলিশ সদস্য অস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন।
মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, “পুলিশ যখন কোনো অভিযানে যায়, তখন দুষ্কৃতিকারীরা অস্ত্র বের করলে আত্মরক্ষার্থে প্রাধিকার অনুযায়ী গুলি করার নির্দেশ কমিশনার স্যার দিয়েছেন।”