
নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যে সমঝোতার পথে হাঁটছিল বলে ধারণা করা হচ্ছিল, সেখানে হঠাৎ করেই দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিভিন্ন ইস্যুতে মতপার্থক্যের কারণে দল দুটির মধ্যে দূরত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জামায়াতের ডাকা যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেয়নি এনসিপি।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আলাদা সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে কর্মসূচি ঘোষণা করে। একইদিনে খেলাফত মজলিস ছয় দফা দাবি জানায়। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, তারা সনদ বাস্তবায়ন, পিআর, গণহত্যার বিচার, নির্বাচনে সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ এবং জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলন চালাবে। এ লক্ষ্যে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরগুলোতে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তবে এই কর্মসূচিতে ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিসসহ চারটি দল যোগ দিলেও শেষ মুহূর্তে এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ এবং এবি পার্টি সরে দাঁড়ায়। এতে প্রশ্ন উঠছে কেন হঠাৎ জামায়াত-এনসিপির সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হলো?
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বরাতে জানা গেছে, নির্বাচন সংস্কারসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দলটির মধ্যে ভিন্নমত তৈরি হয়েছে। ফলে আপাতত জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যেতে আগ্রহী নয় তারা। বিশেষ করে জামায়াতের কিছু সংস্কার দাবির সঙ্গে এনসিপির অবস্থান এক নয়, এজন্য যুগপৎ আন্দোলন থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে দলটি।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, সংস্কারের সব দাবিতে একমত না হওয়া এবং নির্বাচনী জোট নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় আপাতত জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি এনসিপি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপি কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে। আপাতত সম্পর্কের টানাপোড়েন স্পষ্ট হলেও নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে দলটির অবস্থানে পরিবর্তন আসতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্লেষক রাশেদা রওনক খান মন্তব্য করেন, লক্ষ্যের জায়গা এক ছিল, কিন্তু লক্ষ্য পূরণের পর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ভিন্নতা থেকেই স্বাভাবিকভাবে দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা ✅