
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, বর্তমান সময়ে মিডিয়া যদি দায়িত্বশীল না থাকে, তাহলে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সময়ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে। তিনি বলেন, সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করবে। গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য যা যা সহযোগিতা প্রয়োজন, তা তথ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করবে এবং প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তাও দেওয়া হবে।
রোববার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত 'নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে মিডিয়ার ভূমিকা' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা জানান। সভায় সংবাদপত্রের সম্পাদক, প্রকাশক ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
মাহফুজ আলম জানান, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে সরকার ইচ্ছুক। এজন্য নির্বাচনের আগে, নির্বাচনকালীন ও পরবর্তী সময়ে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা প্রতিরোধে এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় পর্যন্ত গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান তথ্য উপদেষ্টা।
এ সময় সাংবাদিকরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার, নির্বাচন কমিশনের আরপিও সংশোধনের এবং এআই ও গুজব প্রতিরোধে ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেন।
তারা বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ না থাকার কারণে বিভিন্ন গুজব ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়। তাই সরকারকে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, নির্বাচনকেন্দ্রিক সাংবাদিকতায় দায়িত্বশীলতার জন্য করণীয় নির্ধারণে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাবও দেন তারা।
নির্বাচনকালীন পরিবেশ নিয়ে সাংবাদিকরা তাদের সংশয় প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এখনও ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের সমর্থকরা রয়ে গেছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, নির্বাচনকালীন সময়ে মব উপস্থিতি বাড়তে পারে। পিআর পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি রয়েছে এবং অবৈধ অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম গত এক বছর ধরে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে। গত জুলাই-আগস্ট মাসে দুই একটি টেলিভিশন ছাড়া অন্য কোনো টেলিভিশনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চিহ্ন ছিল না। এটি সরকারের নজরে ছিল, তবে তারা কাউকে বলেনি কেন তারা এটি করছে। এ ঘটনা দেশের জনগণ দেখেছে।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছরে সবাইকে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ স্বাধীনতা চেয়েছে, কেউ আবার পরাধীনতা। গত ১৬ বছরে যেসব মিডিয়া বন্ধ হয়েছে, তারা এই সময়ে সুযোগ নিতে পারত, কিন্তু অনেকেই নেয়নি। ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া কিছু সাংবাদিক যাদের অনলাইন নিউজ পোর্টালের রেজিস্ট্রেশন এখনও হয়নি, তাদের যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন উপদেষ্টা।