
আগামী মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সফরের সময় তার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে মোদির নিউইয়র্ক সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। তবে সফরটি নিয়ে এখনও বেশ কিছু ‘যদি’ ও ‘কিন্তু’ রয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও এই সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এই সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। রয়টার্সও সরকারি সূত্রে খবর পেয়েছে যে, চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
প্রতিবছর সাধারণ পরিষদের বিতর্কে রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের ভাষণের সময় আগেই নির্ধারণ করা হয়। এবার মোদির ভাষণ ২৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত হয়েছে। সাধারণ পরিষদের অধিবেশন ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তনের ওপর বক্তা তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে।
ভারতীয় রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। পরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য হয়, ফলে মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই শুল্ক মোদি আশা করেননি এবং ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্র অনড় থাকলে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি সন্তোষজনক না হলে ভারত–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চলছে। সুতরাং, মোদি’র নিউইয়র্ক সফর অন্যান্য ঘটনার ওপর নির্ভর করবে।
মোদি এই মাসের শেষের দিকে জাপান সফর করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে। জাপান সফরের পর তিনি চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক হবে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতিই মোদি–ট্রাম্প বৈঠকের সম্ভাবনায় প্রভাব ফেলবে।
ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্পের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে মোদি সফর করেছিলেন। সেসময় ট্রাম্প ভারতকে ‘ট্যারিফ কিং’ বলে সম্বোধন করলেও সম্পর্ক জোরদারের বার্তাও দিয়েছিলেন। তবে পরবর্তীতে ট্রাম্পের নীতি ভারতকে কিছুটা অসন্তুষ্ট করেছিল।
বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে সচেষ্ট। রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা মধুর থাকবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
এদিকে সবার নজর এখন আলাস্কার দিকে। ১৫ আগস্ট ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান, রাশিয়া–ভারত সম্পর্ক ও ভারতের তেল কেনার সিদ্ধান্তও প্রভাবিত হবে।