
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপির আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী তালিকাকে হতাশাজনক আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, তালিকায় অনেক প্রার্থী ‘গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি কিছু ভালো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। কিন্তু মনে হচ্ছে তারা কৌশলগতভাবে ছাত্রদল ও যুবদলের যুব নেতাদের পাশে সরিয়ে দিয়েছে। আমরা সেই যুব নেতাদের আমাদের পার্টিতে স্বাগত জানাই।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমরা জেনেছি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শীঘ্রই দেশে ফিরতে পারেন। আমরা চাই একসঙ্গে বসে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করি।’
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনে মনোনয়নের প্রসঙ্গেও মন্তব্য করে নাসিরুদ্দীন বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) গণতন্ত্রের একটি প্রতীক।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দৃঢ় ভাষায় বলেন, ‘আজ থেকে আমরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছি। হয় তারা বাঁচবে, নয়তো আমরা; কিন্তু আমরা লড়াই করব।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসকে বিভিন্ন সময়ে হয় বিএনপি, হয় জামায়াত দ্বারা আতঙ্কিত করা হচ্ছে। আমি প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই: আপনি যদি ভয় পান, আমরা এখানে আছি। আমরা কারো ভয়ে থাকি না; না বিএনপির, না জামায়াতের।’
নাসিরুদ্দীন আরও সতর্ক করে বলেন, ‘বর্তমানে আসনের লোভ দেখিয়ে ছোট দলগুলোকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা চলছে, যা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য একটি শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিটি দলের নিজস্ব প্রতীক দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার থাকা উচিত। যদি কোনো বড় দল ছোট দলকে নির্বাচনী প্রতীক বিক্রি করে, আমরা ভোটারদের অনুরোধ করব তাদের সমর্থন না দিতে।’
তিনি দাবি করেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ প্রধান উপদেষ্টার জারি করা আবশ্যক। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের কোনো সুযোগ নেই। যদি এমন চেষ্টা করা হয়, শিক্ষার্থীরা আবার রাস্তায় নামবে।’
সংবাদ সম্মেলনের শেষে নাসিরুদ্দীন দলীয় নীতিমতো ‘গণভোট’ আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দলীয় মতামতের ভিত্তিতে নয়, বরং সবার অভিন্ন মতামতের ভিত্তিতেই গণভোটে যাওয়া উচিত। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকেই ঘোষণা করতে হবে। ছাত্র-জনতা আপনাকে বসিয়েছে; তাই আপনাকে শক্ত থাকতে হবে।’