
নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত বাংলাদেশ সফরে এসে আপিল বিভাগের কার্যক্রম সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবেন।
রোববার (২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে তিনি উপস্থিত থাকবেন।
এই সময় আপিল বিভাগে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের বিষয়ে চলমান আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঐতিহাসিক এই মামলার শুনানি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবেন নেপালের প্রধান বিচারপতি। তিনি বাংলাদেশে গতকাল রাতে পৌঁছান।
শুনানি আজ রোববার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এটি পরিচালিত হচ্ছে। আদালতে বিএনপির পক্ষে উপস্থিত আছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে ২৯ অক্টোবর এ মামলার টানা পঞ্চম দিনের শুনানি শেষ হয়।
মামলার ধারাবাহিকতায়, ২৮ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর চতুর্থ দিনের শুনানি শেষ হয়। এদিন জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। ২৩ অক্টোবর তৃতীয় দিনের শুনানিতে ইন্টারভেনর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী। ২২ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের শুনানি হয়, যেখানে রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া যুক্ত ছিলেন। মামলার প্রথম দিন ২১ অক্টোবর শুরু হয়।
এর আগে, ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল দায়ের করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বৈধ ঘোষণা করে।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারী পক্ষ আপিল করেন। আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। এরপর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদ পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস করে এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এরপর সরকারের পরিবর্তনের পর সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।