
‘যে নৌকা ডুবে গেছে তা আর কখনও ভাসবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। আমরা একটি বিষয় ক্লিয়ার করেছি, যে নৌকা ডুবে গেছে তা আর কখনও ভাসবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রথম ধাপ হিসেবে তাদের নিবন্ধন বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছি। এতে করে তাদের পলিটিক্যালি ডিসফাংশনাল করা হবে। আমরা এতে সব রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্যের জায়গায় পেয়েছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই আহ্বায়ক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বজায় রাখা অপশাসনের ধারা আমরা আর চাই না। আর অপশাসন দূরীকরণের যে সংস্কার, তা সব রাজনৈতিক দলকে বজায় রাখতে হবে। কারণ, বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটা তাদের দায়ভার।’
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও আওয়ামী লীগকে দ্রুত নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে তাদের দায় নিতে হবে।’
সারজিত আলম আরও বলেন, ‘অনেক নেতা সেফ এক্সিট নিতে চাচ্ছেন। আমরা খুনি দলের সঙ্গে কোনো আপস করব না।’
এর আগে, শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, গণ ফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।