
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রকাশ্য সতর্কবার্তার পর পশ্চিম তীর দখলের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ইসরায়েলি সরকার।
রাশিয়া টুডে রবিবার ওয়াশিংটন পোস্টের বরাতে জানিয়েছে, শুক্রবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পশ্চিম তীর সংযুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগের দিন হঠাৎ করেই বিষয়টি বৈঠকের এজেন্ডা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, এই স্থগিতাদেশের পেছনে মূল কারণ ইউএই-এর প্রকাশ্য সতর্কবার্তা।
বুধবার টাইমস অব ইসরায়েলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলে নিযুক্ত ইউএই বিশেষ দূত লানা নুসেইবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “প্রত্যেক আরব রাজধানীতে এখনো আঞ্চলিক একীকরণের (ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন) সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ইসরায়েলের উগ্রপন্থি অংশকে তুষ্ট করতে পশ্চিম তীর সংযুক্ত করা হলে সেটি একেবারেই অসম্ভব হয়ে যাবে।”
ওয়াশিংটন পোস্টকে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, আবুধাবির এই প্রকাশ্য সতর্কবার্তা ছিল “অপ্রত্যাশিত” এবং পুরো পরিস্থিতি “খুব অস্বাভাবিক”।
এই বিষয়ে এখনো যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চলতি সপ্তাহে বলেছেন, সম্ভাব্য সংযুক্তি “এখনো চূড়ান্ত বিষয় নয়” এবং তিনি এ নিয়ে “কোনো মন্তব্য করতে চান না।”
২০২৪ সালের শুরুতে কয়েকজন ইসরায়েলি মন্ত্রী আবারও প্রকাশ্যে পশ্চিম তীর দখলের আহ্বান জানান। ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ মন্তব্য করেন, যে কোনো সময় পশ্চিম তীরে “পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ” প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।
পশ্চিম তীর অঞ্চলটি ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে জর্ডানের কাছ থেকে দখল করে নেয় ইসরায়েল। এরপর থেকেই সেখানে অবৈধ বসতি স্থাপন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
২০২০ সালে ইসরায়েল প্রায় এই অঞ্চল সংযুক্ত করে ফেলেছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা বাতিল করে ইউএই ও বাহরাইনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ইউএই ছিল প্রথম আরব দেশ যারা প্রায় এক চতুর্থাংশ শতাব্দী পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। এই পদক্ষেপটি হয়েছিল তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর আওতায়।