
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সেবু প্রদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধ্বংসযজ্ঞ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আর নিহতের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
একদিন আগে প্রদেশটির কেন্দ্রীয় শহর ও আশপাশে নজিরবিহীন বন্যার পানি গাড়ি, ঘরবাড়ি এবং বিশাল জাহাজের কন্টেইনার ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
সেবু প্রদেশের সরকারি মুখপাত্র রোন রামোস জানান, প্রাদেশিক রাজধানীর মেট্রো এলাকার অংশ লিলোয়ান শহর থেকে ৩৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে সেবু প্রদেশে মৃতের সংখ্যা ৭৬-এ পৌঁছেছে।
পুলিশ কর্মকর্তা স্টিফেন পোলিনার জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নেগ্রোস দ্বীপে কমপক্ষে ১২ জন নিহত এবং আরও ১২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ক্যানলাওন শহরে বাড়িঘর মাটিচাপা পড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। তিনি বলেন, “গত বছরের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ক্যানলাওনের উপরের অংশে আগ্নেয়গিরির উপাদান জমা হয়েছিল, যা বৃষ্টির সময় পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।”
এছাড়া, দুর্যোগকালে ত্রাণ বিতরণে ব্যবহৃত একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয়জন ক্রু সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।
এএফপির সাংবাদিকরা বুধবার সেবুর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। ৫৩ বছর বয়সী রেনাল্ডো ভার্গারা বলেন, “ভোর চার বা পাঁচটার দিকে পানি এত প্রবল ছিল যে বাইরে আর কিছু দেখা যাচ্ছিল না। এরকম কিছু আগে কখনো ঘটেনি। পানি প্রচণ্ড উত্তাল ছিল।”
দেশটির আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ চারমাগনে ভারিলা জানান, কালমায়েগি ঝড়ের ভূমিধ্বসের ২৪ ঘণ্টা আগে সেবু সিটির আশেপাশে ১৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা মাসিক গড়ের ১৩১ মিলিমিটারের চেয়ে অনেক বেশি।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, মানব-সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের ঝড় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।