
কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্যসহ দুই শতাধিক শিক্ষককে অবরুদ্ধ করেছেন পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে তালা ঝুলিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দুপুর ১১টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা বসে। সভায় পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের জন্য পৃথকভাবে পশুপালন, ভেটেরিনারি এবং কম্বাইন্ডএই তিন ধরনের ডিগ্রি চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানান।
একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের দুই শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। সভা শেষে তিন ডিগ্রির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা মিলনায়তনের দরজায় তালা লাগিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া সহ সকল শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে ফেলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল ৯টা থেকেই দুই অনুষদের শিক্ষার্থীরা মিলনায়তনের সামনে জড়ো হন। তাদের একমাত্র দাবি, বিএসসি ইন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি নামে একটি সমন্বিত (কম্বাইন্ড) ডিগ্রি চালু করা। সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিত না হওয়ায় তারা তালা ঝুলিয়ে অবরোধে যান।
গত ২৫ জুলাই থেকে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে অংশ নেওয়া পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার বলেন, “আমাদের দাবি ছিল একটা ডিগ্রি এবং সেটি হলো কম্বাইন্ড ডিগ্রি। শিক্ষকবৃন্দের এই সিদ্ধান্ত আমাদের দাবিকে পূরণ করে না। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিরা বলেন, “টানা ৩৬ দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের এই আন্দোলন চলছে। আমরা দেখছি যেন সব জায়গায় চাকরির ক্ষেত্রে কম্বাইন্ড ডিগ্রির প্রাধান্য পাচ্ছে। শিক্ষকরা এখন যে তিনটা ডিগ্রি রাখতে চাইছেন, তাতে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও বাড়বে। আমাদের একটাই কথা যে এক পেশায় একটা ডিগ্রি থাকবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, “পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আজকে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ককে প্রধান করে একটি চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে, যারা কম্বাইন্ড ডিগ্রির জন্য কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন করবে। আগামী সেশন থেকে কম্বাইন্ড কোর্সে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। এবার যারা ভর্তি হয়েছে, তাদের অপশন থাকবে তারা চাইলে ভেটেরিনারি, পশুপালন বা কম্বাইন্ড নিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দুই অনুষদকে এক করতে পারবেন না। দুই অনুষদ মিলিতভাবে কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেবে এবং ধারাবাহিকভাবে দুই অনুষদ থেকেই ডিন হবে।”