দেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামী ২৭ ডিসেম্বর কর্মজীবন থেকে অবসর নিচ্ছেন। অবসরের আগে তিনি বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ১৪ ডিসেম্বর বিদায়ী ভাষণ দেবেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জারি করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৭ বছর। এই বয়স পূর্ণ হওয়ায় তিনি নির্ধারিত সময়েই অবসরে যাচ্ছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামনে এটিই হবে তার শেষ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য।
ঘোষণায় আরও জানানো হয়, ১৪ ডিসেম্বর রোববার বিকেল ৩টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে দেশের সকল জেলা আদালতে কর্মরত উচ্চপদস্থ বিচারকদের নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জেলা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের সামনে প্রধান বিচারপতি তার বিদায়ী অভিভাষণ উপস্থাপন করবেন।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ। হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি হিসেবে ১০ আগস্ট তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং পরদিন তিনি শপথ গ্রহণ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর বিচার ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য তিনি যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিলেন, গত দেড় বছরে সেই পরিকল্পনার আলোকে নেওয়া পদক্ষেপ এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথনকশা নিয়েই তার বিদায়ী বক্তব্যে আলোচনা থাকবে। বিশেষভাবে তিনি চলমান বিচার বিভাগীয় সংস্কার, প্রযুক্তিনির্ভর সেবা বিস্তার, বিচারকদের দক্ষতা উন্নয়ন, আদালতের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, নিম্ন আদালতের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচারপ্রার্থীদের সেবা সহজীকরণ এবং মামলার জট কমানোর মতো বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।
দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর, ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তিনি দেশের সব বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামনে বিচার বিভাগের রোডম্যাপ উপস্থাপন করেন। সেখানে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে নির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন, বিচার বিভাগে দুর্নীতি রোধসহ একাধিক সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত দেড় বছরে সেই রোডম্যাপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। বহুদিনের দাবি পূরণ করে ২০ নভেম্বর বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। নতুন সচিবালয়টি উচ্চ আদালতের অধীনে পরিচালিত হবে এবং উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এর নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।