
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ও বাংলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। উপস্থিত ছিলেন শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব মো. মফিদুর রহমান এবং বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম এবং স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিকের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘পাহাড় থেকে সমতল, সারাদেশে আজ নববর্ষের আমেজ। বাংলাদেশের মানুষ আজ এক হয়ে পালন করছে নববর্ষ। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলছে সারা দেশে। আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে ফ্যাসিবাদ উত্তর বাংলাদেশে দাঁড়িয়েছি। আমরা এই উৎসব ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, হস্তশিল্প, খাদ্যজাতপণ্যের বিদেশে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। উদ্যোক্তারা এই মেলার মাধ্যমে এসব পণ্যের বিদেশে রপ্তানিযোগ্য করে তুলবে। উদ্যোক্তারা যেভাবে ৫ আগস্ট উত্তর বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে আরেকটি শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাবে দেশ। আমি আশা করি বাংলা একাডেমি আয়োজিত এই মেলা উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের ভূমিকা রাখবে।’
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। আজকের র্যালিতে সব জাতিগোষ্ঠী একসঙ্গে অংশগ্রহণ ও আনন্দ করছে। একটা অন্তর্ভূক্তিমূলক ও রঙিন উৎসব। মেলা এমন একটা জায়গা যেখানে দুইপক্ষ খুশি থাকে। একজন ক্রয় করে এবং অন্যজন বিক্রি করে। মেলার সাংস্কৃতিক গুরুত্ব রয়েছে।’
আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘বৈশাখী মেলার আয়োজন আমাদের জন্য একটা ভালো উদ্যোগ। বাংলা নববর্ষ আমরা উদযাপন করবো জাতীয় সংস্কৃতির অংশ হিসেবে। আমাদের উজ্জ্বল অতীত ছিল, সমৃদ্ধ আগামী গড়ার লক্ষ্য নিয়ে আমাদের পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে হবে।’
মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ এখন আমাদের জীবনের অংশ। এ উৎসবের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তাদের তৈরি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্ভূক্তিমূলক সংস্কৃতির মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়েছে।’
উদ্বোধনী আলোচনা শেষে অতিথিবৃন্দ মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং বেলুন উড়িয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এবারের বৈশাখী মেলায় রয়েছে ৯৮টি স্টল। এখানে পাওয়া যাচ্ছে— নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কুটির ও হস্তশিল্প, খেলনা, কারুশিল্পসহ হরেক রকমের সামগ্রী।
এছাড়াও মেলায় থাকছে যাত্রাপালা, পুতুলনাচ, সার্কাস, নাগরদোলা সহ নানাবিধ বিনোদনমূলক আয়োজন।
মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকল দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।