
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ থেকে দূরে থাকার জন্য যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীদের বিশেষ আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। গত মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে তিনি এই বার্তাটি জানিয়েছেন।
স্টারমার বলেন, ‘এই দিনে বিক্ষোভ আয়োজন করা ‘অ-ব্রিটিশ আচরণ’ এবং অতীতে কেউ কেউ ৭ অক্টোবরের ঘটনাকে ব্রিটিশ ইহুদিদের উপর আক্রমণের জন্য জঘন্য অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছে।’
দেশজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে লন্ডনের কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা শহরে যৌথ মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ম্যানচেস্টার, গ্লাসগো, এডিনবরো ও ব্রিস্টলসহ অন্যান্য শহরেও একই ধরনের বিক্ষোভ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ট্রেডিশনাল সংবাদমাধ্যম টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে স্টারমার বলেন, ৭ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারও বিক্ষোভের পরিকল্পনা হচ্ছে, যা দেশের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলেনা। তিনি আরও বলেন, ‘অন্যের প্রতি এতটা অসম্মান প্রদর্শন ‘অব্রিটিশ’ নয়। কিছু মানুষ ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক স্লোগান দিতে শুরু করেছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।’
স্টারমার জোর দিয়ে উল্লেখ করেন, ‘যারা ইহুদি সম্প্রদায়ের ক্ষতি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য সবসময় একজোট থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সড়কে ইহুদিবিদ্বেষ বা অ্যান্টিসেমিটিজম বাড়ছে। আমাদের ইহুদি সম্প্রদায়ও এর শিকার হচ্ছেন।’
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ দলের নেতা কেমি ব্যাডেনক সতর্ক করে দিয়েছেন যে এই বিক্ষোভ যেন ‘ঘৃণার মিছিল’ হিসেবে পরিণত না হয়।
গত শনিবার (৪ অক্টোবর) লন্ডনের কেন্দ্রীয় এলাকায় ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামে নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে আয়োজিত বিক্ষোভ থেকে মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রায় ৫০০ জনকে আটক করে।
ম্যানচেস্টারে গত সপ্তাহে এক সিনাগগে প্রাণঘাতী হামলার পর দেশজুড়ে ইহুদি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সিনাগগ হামলার পর সরকার ও পুলিশ বিক্ষোভ স্থগিত রাখার আহ্বান জানালেও শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নামেন।
উল্লেখযোগ্য, স্টারমারের সরকার গত মাসে আন্তর্জাতিক চাপে গাজা যুদ্ধের অবসান চাওয়ার অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছে।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় ৬৭ হাজার ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৯ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।