
শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে কিছু চক্রান্তকারী গোষ্ঠী সক্রিয় ছিল বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। অসুরের মুখে দাড়ি লাগিয়ে পূজামণ্ডপে বিভেদ সৃষ্টির এই অপচেষ্টার পেছনে ফ্যাসিস্ট চক্রের মদদ রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।
রবিবার, ৫ অক্টোবর দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ফ্যাসিস্ট ও তাদের সহযোগীরা কয়েকটি পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগিয়ে ধর্মীয় বিভেদ, সাম্প্রদায়িক উসকানি ও সহিংসতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করেছিল। এ ঘটনায় কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীদেরও ইন্ধন ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “একটি পার্শ্ববর্তী দেশে দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সময় আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকে যেভাবে নিন্দনীয়ভাবে উপস্থাপনের সংবাদ পাওয়া গেছে, অসুরের মুখে দাড়ি দেয়ার কাজটির মধ্যে সেটারই যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে।”
চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং পূজামণ্ডপ কমিটিগুলোর সমন্বিত ভূমিকার প্রশংসা করে উপদেষ্টা জানান, “গতবারের মতো এবারও সারাদেশে শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগানোর ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, “এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজায় সারাদেশে ৭৯৩টি পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।”
পাহাড়ে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, সেটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “যে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এত তুলকালাম ঘটেছে, মেডিকেল রিপোর্টে সে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ পাহাড়ের সাধারণ জনগণের সহযোগিতায় এ ঘটনা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মোকাবিলা করা সক্ষম হয়েছে।”
তিনি জানান, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পার্বত্য এলাকায় জারি করা অবরোধ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং আইজিপি বাহারুল আলম।