
বাংলাদেশের আলেমরা কেবল মসজিদের ইমামতি নয়, বরং জাতির দিকনির্দেশনার ভূমিকাও পালন করবেন বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার, ৪ অক্টোবর দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত আল-ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় উলামা কমিটির আয়োজিত ‘দাঈ ও ওয়ায়েজ সম্মেলনে’ তিনি এই বক্তব্য দেন।
সমাবেশে তিনি বলেন, "এটা ঠিক, দেশের সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ৯০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মুসলমান। আর বাকিরা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান। কিন্তু আমরা এখানে ধর্মের নামে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই। আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি দেখতে চাই।"
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে আমরা হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান দশকের পর দশক ধরে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি। দুনিয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে কয়টি দেশ আছে উল্লেখ করার মতো, বাংলাদেশ সেই জায়গায় বিশেষ স্থান দখল করে আছে।”
মানুষের বিবেক ও বিচারবোধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মানুষের সামনে বিভিন্ন ধর্ম-মত আছে। আল্লাহ মানুষকে বিবেকে শানিত শক্তি দিয়েছেন। মানুষ তার বিবেচনা ও বিবেকের জায়গা থেকে সে ধর্মকে গ্রহণ করবেন।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশে যখন জাতিগত সংকট দেখা দেয়, তখন আলেম ও শিক্ষিত ব্যক্তিদেরই সামনে এসে জাতিকে পথ দেখাতে হয়। স্বাধীনতার পর এতদিন কেটে গেলেও দেশে এখনো মানবিক, দায়িত্বশীল ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে ওঠেনি, যা স্পষ্ট করে সংকটকে নির্দেশ করে।
তার ভাষায়, “কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ওলামায়ে কেরাম পথ দেখালে জাতি উপকৃত হবে। জাতিও তাদের কাছ থেকে সেটাই প্রত্যাশা করে।”
তিনি সবাইকে রাজনৈতিক বা মতভেদ-নির্ভর বিরোধে না জড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তার মতে, আলেমরা কেবল ধর্মীয় নেতাই নন, তারা জাতীয় নেতৃত্বেও ভূমিকা রাখতে পারেন। সমাজের কল্যাণে আলেমদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই, শিক্ষিত সমাজের সবাই নয়, কিন্তু শিক্ষিত সমাজের একটি অংশ যে ক্ষতি জাতির করে, সাধারণ দেশবাসীর কোটি কোটি মানুষ মিলেও সেই ক্ষতি জাতির করতে পারে না; এ যোগ্যতা তাদের নেই। কলমের খোঁচায় একজন মানুষের, জাতির কিসমত (ভাগ্য) যেভাবে ধসে পড়ে, কোটি মানুষ একত্র হয়েও সেই ক্ষতি করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রেও ওলামায়ে কেরামের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে জাতিকে জাগ্রত করার, সতর্ক করার।”
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এবং এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।