
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে এক নারীর সঙ্গে ঘটেছে সিনেমার মতো প্রতারণা। সোনালী ব্যাংকের ভেতরেই মুখে ছিটানো হয় স্কোপোলামিন, যা সাধারণভাবে পরিচিত ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামে। মুহূর্তেই নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি, বুঝে ওঠার আগেই খোয়া যায় ১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
এই ঘটনা ঘটে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বুড়িচং সদরের ইসলাম কমপ্লেক্সে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক শাখায়।
ভুক্তভোগী মোসা. সামসুন নাহার (৪৫), পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোসাইপুর গ্রামের জব্বার মাওলভী বাড়ির মো. আব্দুল মালেকের স্ত্রী। তিনি জানান, তাঁর একমাত্র ছেলে ও দুই ভাই বর্তমানে কর্মরত সৌদি আরবে। প্রবাস থেকে পাঠানো অর্থ দিয়ে পরিবারের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ওইদিন ব্যাংকে যান তিনি। চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন ১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
লিখিত অভিযোগে সামসুন নাহার উল্লেখ করেন, টাকা তোলার পর ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে টাকা গুনছিলেন। ঠিক তখনই ৪-৫ জন অচেনা ব্যক্তি গ্রাহকের ছদ্মবেশে তার আশপাশে দাঁড়ায়। তারা কৌশলে স্কোপোলামিন তার নাক ও মুখে প্রয়োগ করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং অজান্তেই টাকাগুলো প্রতারকদের হাতে তুলে দেন।
ব্যাংক থেকে বাইরে বের হওয়ার পর কিছু সময় পর জ্ঞান ফিরে আসে তার। তখন বুঝতে পারেন, টাকা আর তার কাছে নেই।
পরদিন, বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি বুড়িচং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ ব্যাংকে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। আমরা এ ঘটনায় তদন্ত করছি এবং প্রতারক চক্রকে শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
সোনালী ব্যাংক বুড়িচং শাখার ম্যানেজার জহুর আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ৪-৫ জন প্রতারক খুব চতুরভাবে ওই নারী গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়। কিছুদিন আগেও কংশনগর সোনালী ব্যাংকে এমনই ঘটনা ঘটেছিল। আমরা সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং প্রতারকদের ধরিয়ে দিতে সর্বসাধারণের সহযোগিতা কামনা করছি।”