
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নীলাচল শ্রমজীবী সমবায় সমিতির কর্মকর্তারা শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রতারণায় ভুক্তভোগীরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নীলাচল শ্রমজীবী সমবায় সমিতি ২০২০ সালে রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় গড়ে ওঠে। সমিতির ম্যানেজার ছিলেন মাইনুদ্দিন খান জয়, সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ এবং কোষাধক্ষ মোহাম্মদ জিকু।
প্রাথমিকভাবে কিছু গ্রাহককে ঋণ দিয়ে আকৃষ্ট করলেও পরে এলাকাবাসী এফডিআর, সঞ্চয় ও অন্যান্যভাবে সমিতিতে টাকা গচ্ছিত রাখতে শুরু করেন। মো. জিকু গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত টাকার দায়িত্ব নেন। তবে কিছুদিন আগে সমিতির অফিস তালা বন্ধ হয়ে যায় এবং জিকু, জয় ও সবুজসহ অন্যান্য কর্মকর্তা পালিয়ে যান।
চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র ১নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে মোহাম্মদ শাহিন জানান, তিনি দৈনিক সঞ্চয়, এফডিআর ও পরিবারের সদস্যদের সঞ্চয়সহ মোট ৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা সমিতিতে জমা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, "শিকু এবং তার পরিবার এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। টাকা চাইলে অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়।"
আল আমিন মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেগম জানান, তিনি মাসিক মুনাফা ভিত্তিতে সমিতিতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন। সমিতি তালা বন্ধ করে কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ায় তিনি ও তার পরিবার দিশাহারা। তিনি বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উপজেলা সমবায় বিষয়ক অফিসার আলমগীর আজাদ ভূঁইয়া জানান, “৭০ জন গ্রাহকের প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তারা পালিয়ে গেছেন। হয়তো আরও অনেক গ্রাহক প্রভাবিত হতে পারেন। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, “নীলাচল শ্রমজীবী সমবায় সমিতি গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি সমবায় অফিসারকে তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”