
গাজা উপকূল থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে এসে পৌঁছেছে বহুল আলোচিত মানবিক সহায়তাবাহী 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা', ইসরায়েলি নৌবাহিনীর বাধা ও আটকের নানা প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করেই।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ভূমধ্যসাগরের জলসীমায় ফ্লোটিলাটি অবস্থান করছিল, তখন গাজার পশ্চিমে এর দূরত্ব ছিল মাত্র ৫০ কিলোমিটার।
এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগে অংশ নেওয়া মোট ৫১টি জাহাজের মধ্যে ইতোমধ্যে ২১টি ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে, যেগুলোর আরোহীর সংখ্যা ছিল ২০০-এর বেশি। তবে বাকী ৩০টি জাহাজ এখনও গাজামুখী যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর সরাসরি হামলার মুখেও তারা পিছু হটেনি।
এই অভিযানে বাংলাদেশের খ্যাতনামা ফটো সাংবাদিক শহীদুল আলম অংশ নিচ্ছেন ‘কনসায়েন্স’ নামের একটি তুর্কি বোটে। তুরস্ক ও আজারবাইজান থেকে আসা কর্মীদের নিয়ে পরিচালিত এই জাহাজটি এখনও গাজার দিকে অগ্রসরমান এবং এটি এখনো আইডিএফের হাতে আটক হয়নি।
ইসরায়েলি ড্রোন থেকে অবিরত নজরদারি চলছে যেসব নৌযান এখনো মুক্তভাবে এগোচ্ছে, তাদের ওপর। মাঝে মাঝে ওয়াটার ক্যাননের মাধ্যমে হামলা চালানো হচ্ছে, ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দিয়ে জাহাজে আঘাত করা হচ্ছে এবং কমিউনিকেশন সিস্টেমে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমনকি কিছু নৌযান ডুবিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও উঠে এসেছে। আটক কর্মীদের জোরপূর্বক ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবকিছুই ঘটছে আন্তর্জাতিক জলসীমায়, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী স্পষ্টতই বেআইনি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এ বিষয়ে কোনো ধোঁয়াশা না রেখে জানিয়ে দিয়েছেন, “ইসরায়েল কোনোভাবেই এসব বোটকে গাজায় প্রবেশ করতে দেবে না।” তিনি এই মানবিক মিশনকে “প্রতারণা” বলে আখ্যায়িত করে বলেছেন, “এটি হামাসকে সমর্থনের একটি প্রচেষ্টা।”
বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নাগরিকদের নিয়ে গঠিত এই আন্তর্জাতিক ফ্লোটিলা, যাদের লক্ষ্য গাজার অবরুদ্ধ জনগণের কাছে সরাসরি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, এখন এক অনিশ্চিত ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি।