
চট্টগ্রামে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা খুবই সীমিত অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, সরকারি পর্যায়ে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এটি চট্টগ্রামবাসীর জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে কনফারেন্স রুমে কার্যনির্বাহী কমিটি, হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ডাক্তার, নার্স ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, সরকারের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেও আমরা অগ্রাধিকার অনুযায়ী স্বাস্থ্যখাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। হার্টের রোগীদের রিং, ক্যান্সারের ঔষধসহ বিভিন্ন ওষুধের দাম কমানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, দেশের অধিকাংশ বিশেষায়িত হাসপাতাল ঢাকাকেন্দ্রিক। চট্টগ্রামে বিশেষায়িত চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার প্রয়োজন রয়েছে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালকে তিনি ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি চিকিৎসা সেবায় চট্টগ্রামবাসীর আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। করোনাকালীন সময়েও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
নার্সদের বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষ করে গড়ে তুলতে ইংরেজি ও জাপানি ভাষায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে কোয়ালিটি টিচিং অপরিহার্য। যারা মান নিশ্চিত করতে পারবে না, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
ডাক্তারদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ডাক্তারদের কোনো দল থাকতে পারে না। সবার ওপরে তারা ডাক্তার। মানবিক হতে হবে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা বজায় রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সবকিছুতেই অস্থিরতা কাজ করছে। এটি মানসিক দৈন্যতা। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
পরিদর্শনের অংশ হিসেবে হাসপাতালের এনআইসিইউ, পিআইসিইউসহ কয়েকটি বিভাগ তিনি দেখেন। কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম ও গ্রান্ট ইন অ্যাইড খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও উপদেষ্টার একান্ত সচিব ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, ডেপুটি সিভিল সার্জন তৌহিদুল ইসলাম, হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডোনার) ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা, জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারী মো. জাহিদুল হাসান, অর্গানাইজিং সেক্রেটারী মোহাম্মদ সাগির, ডোনার মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার মো. জাবেদ আবছার চৌধুরী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. এ টি এম রেজাউল করিম, মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল প্রফেসর এ এস এম মোস্তাক আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল প্রফেসর অসীম কুমার বড়ুয়া, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নূরুল হক, পরিচালক (মেডিক্যাল এফেয়ার্স) ডা. এ কে এম আশরাফুল করিম, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নিওনেটোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর (ডা.) ওয়াজির আহমেদ, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. মো. জালাল উদ্দিন, অবস অ্যান্ড গাইনী বিভাগের প্রধান প্রফেসর (ডা.) সিরাজুন নুর রোজী, জেনারেল সার্জারী বিভাগের প্রধান প্রফেসর (ডা.) আনোয়ারুল হক, শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক (ডা.) দিদারুল আলম, প্রফেসর বাবুল ওসমান চৌধুরী, প্রফেসর (ডা.) তাহেরা বেগম, প্রফেসর (ডা.) সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস, প্রফেসর (ডা.) আসমা মোস্তফা, ডেন্টাল বিভাগের প্রধান অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর (ডা.) মো. কামরুল ইসলাম, নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপাল মিসেস স্মৃতি রাণী ঘোষ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল মিসেস ঝিনু রানী দাশ।