
গাজার যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী হামাস রেড ক্রসের মাধ্যমে তিনজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। রোববার, ২ নভেম্বর, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, দেহাবশেষ শনাক্তকরণের জন্য ইসরায়েলে নেওয়া হবে।
যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরায়েল গাজা থেকে মোট ১১ জন নিহত জিম্মির দেহ উদ্ধার করতে চাচ্ছে। হস্তান্তর করা তিনটি মরদেহ সেই তালিকার অংশ হিসেবে ধরা হচ্ছে। ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, হামাস দেহাবশেষ উদ্ধারে ধীরগতি দেখাচ্ছে, তবে হামাস দাবি করছে, কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও তারা যথাসম্ভব দ্রুত কাজ করছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই রোববার উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একজন নিহত হয়েছে। আল-আহলি হাসপাতাল জানিয়েছে, গাজার শেজাইয়া শহরতলির একটি সবজি বাজারের কাছে বিমান হামলার ফলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। জেরুজালেমে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, ‘গাজার আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় এখনও হামাসের কিছু পকেট রয়েছে, এবং আমরা পরিকল্পিতভাবে তাদের নির্মূল করছি।’
হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের মিডিয়া অফিসের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেছেন, ‘আমাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি সৈন্যদের লক্ষ্য করে হামলা করেনি।’ তবে সহিংসতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। যুদ্ধবিরতির কারণে অনেক ফিলিস্তিনি নিজেদের বাড়িতে ফিরতে সক্ষম হয়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে জীবন ফিরে আসছে। এদিকে ইসরায়েল শহরগুলোর কাছাকাছি থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে এবং মানবিক সহায়তার প্রবেশও বাড়াচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির আওতায় ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে হামাস ২০ জন জীবিত জিম্মি মুক্তি দিয়েছে। এছাড়া ৩৬০ জন নিহত ফিলিস্তিনি যোদ্ধার মরদেহের বিনিময়ে ২৮ জন নিহত জিম্মির দেহাবশেষ হস্তান্তরের জন্য হামাস সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে রোববারের আগে ১৭টি হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতির সময় উভয়পক্ষই লঙ্ঘন বন্ধে ওয়াশিংটনকে সাহায্যের অনুরোধ করেছে। মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন গাজা সফরের সময় ইসরায়েলি সামরিক প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজায় যে কোনো সামরিক পদক্ষেপের খবর যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হবে।
তবে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।