
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী জামায়াতকে আলাদা রেখে দেশের সব ইসলামী দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “জামায়াতের ইসলাম আর আমাদের ইসলাম এক নয়। আমরা মদীনার ইসলাম পালন করি, তারা মওদুদীর ইসলাম পালন করে।”
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দাওয়াতুল ইহসান আয়োজিত ‘কওমি মাদ্রাসার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
জানা গেছে, জামায়াতের সঙ্গে অন্য ধর্মভিত্তিক দলগুলো নির্বাচনী সমঝোতার দিকে যাচ্ছে। হেফাজতের সংশ্লিষ্ট দলগুলোও জামায়াতের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন চালাচ্ছে, এবং জমিয়ত বিএনপির সঙ্গে জোটে রয়েছে। সম্প্রতি হেফাজতের নেতারা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শনিবারের সম্মেলনে জমিয়ত নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বাবুনগরী বলেন, “অতীতেও বহুবার ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখনও সেই পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাই পরামর্শ হলো— ইসলাম ও ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত করবে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না।”
তিনি আরও বলেন, “কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একদিকে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ইসলামী মূল্যবোধের ওপর নানামুখী আঘাত আসছে। স্পষ্টভাবে বলতে চাই— বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় মূল্যবোধের জন্য এক অশনি সংকেত। ইসলাম ও বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।”
বাবুনগরী জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদীর সমালোচনা করে বলেন, “মওদুদীর গোটা জীবন কেটেছে সাহাবিদের বিতর্কিত করার কাজে। সাহাবিদের সত্যের মাপকাঠি স্বীকার না করলে, কোরান ও হাদিস বিতর্কিত হয়ে যাবে। তাই বিশ্বের শীর্ষ উলামাদের ফতোয়া, জামায়াতের ইসলাম আর মদিনার ইসলাম নয়।”
তিনি আরও বলেন, “মওদুদীর ফেতনা কাদিয়ানিদের চেয়েও ভয়ংকর। কারণ, কাদিয়ানিবাদ ইসলামের বাইরের ফেতনা, যা সহজে চেনা যায়। কিন্তু মওদুদীবাদ ইসলামের ঘরের ফেতনা, যার ভয়াবহতা সবাই ধরতে পারে না।”
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন দাওয়াতুল ইহসানের সভাপতি আল্লামা আবদুল আউয়াল। এতে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের আলেম আল্লামা ইলিয়াস গুম্মান, হেফাজত মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী প্রমুখ।