
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ভোলার লালমোহনের ১৩ জেলের সন্ধান অবশেষে মিলেছে ২০ দিন পর। জানা গেছে, ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে ফিশিংবোটসহ তাদের আটক করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। পরে জেলেদের পশ্চিমবঙ্গের এক থানায় হস্তান্তর করা হলে পুলিশ তাদের আদালতে উপস্থাপন করে।
ভারতে আটক থাকা জেলেরা হলেন- ট্রলার মালিক ফারুক (৫৩), জাহাঙ্গীর (৩৮), শামিম (২৩), খোকন (৩৫), সজিব (২২), আলম (৪৬), হেলাল উদ্দিন (৪০), ফারুক (৪২), মাকসুদুর রহমান (৪২), ছাব্বির (২৫), নাছির, আব্দুল মালেক ও মাকসুদ। সবাই লালমোহনের ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
২৩ নভেম্বর ‘বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১৩ জেলে নিখোঁজ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে। অবশেষে নিখোঁজ ট্রলার মালিক ফারুকের ছেলে মো. শাহীন সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে নিশ্চিত করেন যে তার বাবাসহ সব জেলের অবস্থান জানা গেছে।
শাহীন জানান, প্রতিবন্ধী জেলে ছাব্বির প্রথমে তার চাচাতো ভাইয়ের মোবাইলে ভিডিও কল দেন এবং পরিবারের সাথে কথা বলেন। ভিডিও কলে তার সঙ্গে আরও কয়েকজন নিখোঁজ জেলেকে দেখা যায়। পরে বাবার সাথেও কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, পুলিশ তাদেরকে ভারতের একটি আদালতে হাজির করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “তারা নিখোঁজ থাকাকালীন আমরা চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় ছিলাম। তারা বেঁচে আছেন জেনে স্বস্তি মিললেও এখন নতুন দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে, কারণ তারা ভারতে বন্দি। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।”
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ভোলা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদও দ্রুত সরকারি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভারতে আটক ১৩ জেলেকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের।
উল্লেখ্য, গত ১০ নভেম্বর দুপুরে লালমোহনের ধলীগৌড়নগর ইউনিয়নের মাস্টার বাজার এলাকা থেকে ‘মা-বাবার দোয়া’ নামের ফিশিংবোটটি যাত্রা শুরু করে। ট্রলার মালিক মো. ফারুক মাঝির নেতৃত্বে ১৩ জেলে ৫ দিনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে মেঘনা নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে রওনা হন। চরফ্যাশনের সামরাজ ঘাটে বরফ সংগ্রহের পর তারা আবার গভীর সমুদ্রে যান। পরদিন ১১ নভেম্বর থেকেই তাদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।