
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের রায়ের দিন নির্ধারণ করেছে। রায় ঘোষণা হবে আগামী ১৭ নভেম্বর (সোমবার)।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই তারিখ ঘোষণা করেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম, ফারুক আহম্মদসহ অন্যান্যরা।
আদালত সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগে বিচার চলছে। সেগুলো হলো-
গণভবনে উসকানিমূলক বক্তব্য: ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উসকানি মূলক বক্তব্য দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও অন্যান্যদের সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান।
হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ: অভিযোগ অনুযায়ী, শেখ হাসিনা আন্দোলন দমনের জন্য হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করেন।
রংপুরে আবু সাঈদের হত্যা: ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় তিনজনকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।
চানখাঁরপুলে হত্যা: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পুরান ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হন; এ ঘটনায় শেখ হাসিনা ও দুই সহপরিচালককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আশুলিয়ায় হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে দেওয়া: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং তাদের মধ্যে পাঁচজনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া ও গুরুতর আহত একজনকে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই রায়ের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থান মামলার চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা নির্ধারিত হবে।