ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য শুরু
শোকের চাদরে সেইন্ট পিটার’স চত্বর
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:২০ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ইস্টার সানডেতে ভক্ত-অনুরাগীদের দেখা দেওয়ার পরদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য শুরু হয়েছে।
সেইন্ট পিটার’স চত্বরে তার ফিউনারেল মাস বা প্রার্থনা অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন বিশ্বের দেড়শর বেশি দেশের প্রতিনিধিরা। তাদের অধিকাংশের পরণে কালো কোট, যা অনুষ্ঠানের ভাবগাম্ভীর্যতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শনিবার সেইন্ট পিটার’স চত্বরে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া এ প্রার্থনাসভায় অংশ নিয়ে তারা সেই সাদামাটা পোপকে স্মরণ করবেন, যিনি ক্যাথলিক চার্চকে বদলে দিতে চেয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের বসার জায়গায় একেবারে সামনের সারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন ইতালির ৯১ বছর বয়সী পুরোহিত জিওভান্নি বাত্তিস্ত রে।
আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে গত সপ্তাহে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর পরপরই প্রায় দেড়শ কোটি অনুসারীর ক্যাথলিক চার্চ পোপ বিদায়ের প্রাচীন রীতি ও আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে।
শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার সকাল থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পোপের মরদেহ ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত সেইন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকায় শায়িত রাখা হয়। এই সময়ের মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ তার কফিনকে আবর্তন করেছে বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান।
শনিবার ফ্রান্সিসের কফিনবন্দি মরদেহ ওই ব্যাসিলিকার মূল দরজা দিয়ে বাইরে নিয়ে আসা হয়। প্রার্থনাসভায় প্রয়াত পোপের কফিনের এক পাশে আছেন বিদেশি অতিথিরা, অন্য পাশে আছেন লাল টুপি পরা কয়েকশ কার্ডিনাল।
ফ্রান্সিসের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ট্রাম্প, মেলানিয়া, ম্যাক্রোঁ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার স্ত্রী জিল, ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ব্রাজিলের লুলা দ্য সিলভাসহ অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা ভ্যাটিকানে পৌঁছেছেন।
ইতালি, ফিলিপিন্স, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, পোল্যান্ড ও গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাজ্য ও নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপের বিভিন্ন রাজপরিবারের অসংখ্য সদস্যও এই প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছেন।
ব্যাসিলিকায় যাওয়ার প্রধান রাস্তা ও পাথর বসানো বিশাল খোলা চত্বর ভরে প্রায় আড়াই লাখ শোকার্ত ভক্ত এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলেও আশা করছে ভ্যাটিকান।
দেড় ঘণ্টার মতো এই প্রার্থনাসভা চলবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এরপর ফ্রান্সিসের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে সান্তা মারিয়া ম্যাগিওরের ব্যাসিলিকায়, সেখানেই সমাধিস্থ করা হবে প্রায় ১ হাজার ৩০০ বছরের মধ্যে প্রথম অ-ইউরোপীয় এ পোপকে, যিনি তার ১২ বছরের নেতৃত্বকালে দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষজনের পক্ষ নিয়ে ধনীদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও অভিবাসীদের সাহায্যে যাকে প্রায়ই কথা বলতে দেখা গেছে।