
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এই সপ্তাহে এক ঘোষণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখ বন্ধ অবস্থার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, তিনি যেন মুহূর্তের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছেন। ট্রাম্পের সমালোচকরা এই দৃশ্যকে তুলে ধরছেন প্রেসিডেন্টের কার্যদক্ষতার বিষয়ে প্রশ্ন তোলার প্রমাণ হিসেবে।
গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ওজন কমানোর জনপ্রিয় ওষুধের দাম কমানোর বিষয়ে ওভাল অফিসে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানের কিছু মুহূর্তে দেখা গেছে, তার চোখ বন্ধ রয়েছে, আবার কখনো চোখ খুলে রাখতেও কষ্ট হচ্ছে। মাঝে মাঝে তিনি চোখ কচলাচ্ছিলেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের প্রেস অফিস ছবিগুলো পোস্ট করে লিখেছে, ‘ডোজি ডন ফিরে এসেছেন।’
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র টেইলর রজার্স সিএনএনকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ঘুমাচ্ছিলেন না; বরং তিনি পুরো অনুষ্ঠান চলাকালীন বক্তব্য দিয়েছেন এবং সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এই ঘোষণা দুইটি ওষুধের মাধ্যমে আমেরিকানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খরচ বাঁচাবে এবং অসংখ্য জীবন রক্ষা করবে। তবুও, ব্যর্থ, লিবারেল মিডিয়া একটি বাজে ন্যারেটিভ প্রচার করতে চাইছে।’
ট্রাম্প সাধারণত দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন এবং নিয়মিত জনসাধারণের সামনে উপস্থিত থাকেন। সহকর্মী ও ক্যাবিনেট সদস্যরা তার কর্মদক্ষতার প্রশংসা করেন এবং জানান, তিনি প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে ফোন বা বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগ রাখেন।
উল্লেখযোগ্য, ঘোষণার এক দিন আগে ট্রাম্প মিয়ামিতে এক অর্থনৈতিক বক্তৃতা দেন, যা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে। এছাড়া গত মাসে তিনি এশিয়ার তিনটি দেশ সফর শেষ করেছেন।
সর্বাধিক বয়সে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে ট্রাম্পের স্বাস্থ্য নিয়ে অতীতে বহুবার প্রশ্ন উঠেছে। ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প গত মাসে জানিয়েছেন, তিনি ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে শারীরিক পরীক্ষার সময় এমআরআই করিয়েছিলেন, তবে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি।
গ্রীষ্মকালে হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, চিকিৎসকরা ট্রাম্পের পায়ে ফোলাভাব পরীক্ষা করে ক্রনিক ভেনাস ইনসফিশিয়েন্সি রোগ নির্ণয় করেছেন। এটি এমন একটি শিরার অবস্থা, যেখানে শিরার কিছু ভালভ সঠিকভাবে কাজ করে না, ফলে রক্ত জমে থাকে।
বিশ্লেষকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সব প্রেসিডেন্ট কখনও কখনও জনসাধারণের সামনে ক্লান্ত দেখান। এমনকি তুলনামূলকভাবে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ক্ষেত্রেও দীর্ঘসময়ের সামিটের সময় চোখ ঘষে ক্লান্তির চিহ্ন দেখা গিয়েছিল।
ট্রাম্প এর আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে কর্মদক্ষতার অভাবে সমালোচনা করেছেন এবং তাকে ‘স্লিপি জো’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বয়সে দায়িত্ব নেওয়া বাইডেনও মাঝে মধ্যে জনসাধারণের সামনে চোখ বন্ধ রাখার দৃশ্যে দেখা গেছেন।