ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি ও পরামর্শ
- ফিচার ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৫৯ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২৫

দেশে চাকরির বাজারে বিসিএসের পরেই ব্যাংকের অবস্থান। বিভিন্ন কারণেই ব্যাংকের চাকরি তরুণদের কাছে জনপ্রিয়। এরমধ্যে ভালো সুযোগ সুবিধা, দ্রুত পদোন্নতি, সুগঠিত বেতন কাঠামো ও সামাজিক পরিমণ্ডলের ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা অন্যতম। যেকোনো বিষয়ে পড়াশোনা করে ব্যাংকে চাকরির সুযোগ, স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ার গড়ার হাতছানিসহ ব্যাংকারদের সুশৃঙ্খল পরিপাটি জীবন তরুণদের প্রবলভাবে আকৃষ্ট করছে। ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভা- এই তিনটি ধাপ পার করতে হয়। ব্যাংকে চাকরির প্রস্ততি ও পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাকের অফিসার (জেনারেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি
সঠিক পরিকল্পনা এবং নিয়মিত অধ্যয়নই ব্যাংক পরীক্ষায় ভালো করার মূল চাবিকাঠি। নিচে বিষয়ের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত বইয়ের তালিকা দেওয়া হলো—
বাংলা
জর্জ এমপি-৩ অথবা অগ্রদূত বাংলা ব্যাকরণ। কেবল ব্যাংকের জন্য পড়লে সাহিত্য অংশ বাদ দেওয়া যেতে পারে।
ইংরেজি
Master’s by Jahangir Alam (ব্যাংকের জন্য সাহিত্য অংশ বাদ দিয়ে পড়া যাবে)। ভোকাবুলারি অংশের জন্যে Arifur Rahman's Bank Vocabulary এবং বাজারের প্রচলিত যেকোন একটা ভোকাবুলারি বই পড়তে পারেন।
গণিত
খাইরুলের ব্যাংক ম্যাথ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর গণিত বই। এ ছাড়া অ্যাডভান্স লেভেলের প্রস্তুতি নিতে চাইলে Agarwal’s Quantitative Aptitude থেকে বেছে বেছে ৮-১০টি চ্যাপ্টার শেষ করতে পারেন।
সাধারণ জ্ঞান
বিসিএস ও ব্যাংকের বিগত সালের প্রশ্নব্যাংক, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়তে হবে। এ ছাড়া নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করা (বিশেষ করে অর্থনীতি ও সমসাময়িক বিষয়) থাকতে হবে।
তথ্য ও প্রযুক্তি (আইসিটি)
এ অংশের জন্য ইজি কম্পিউটার বইটা শেষ করতে পারলেই হবে। পাশাপাশি বিগত বছরের ব্যাংক পরীক্ষার আইসিটি অংশের প্রশ্ন সমাধান করতে হবে।
প্রাইভেট ব্যাংকের প্রস্তুতি
IBA ও BIBM-এর প্রশ্নব্যাংক সংগ্রহ করে পড়ে শেষ করতে পারলে প্রাইভেট ব্যাংকের প্রশ্ন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে।
লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন—
বাংলা ও ইংরেজি রচনা অনুশীলন: প্রতিদিন বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করা। পত্রিকা থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী লেখা পড়তে হবে। যেমন- অর্থনীতি, সামাজিক সমস্যা, বিশ্ব রাজনীতি। পত্রিকা পড়তে অভ্যাস না থাকলে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও মহিদস মাসিক সম্পাদকীয় থেকেও উক্ত বিষয়ে পড়া যেতে পারে।
ব্যাংকিং ও অর্থনীতির প্রাথমিক ধারণা: ব্যাংকিং টার্ম ও নীতি সম্পর্কে জানা, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ব্যাংক সংক্রান্ত সাম্প্রতিক তথ্য সংগ্রহ করা।
সৃজনশীল ও বিশ্লেষণধর্মী লেখার অনুশীলন: নিয়মিত ভাবে যেকোনো একটা বিষয় সিলেক্ট করে সেটার উপর ২/৩ পেজ লিখে তারপর নিজের লেখা নিজেই মূল্যায়ন করা ও সংশোধন করা, ব্যাংক ও বিসিএস পরীক্ষার বিগত বছরের লিখিত প্রশ্ন দেখে চর্চা করা,
সাফল্যের মূলমন্ত্র
নিয়মিত অধ্যয়ন ও অনুশীলন: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে পড়াশোনা করা।
সঠিক পরিকল্পনা: বিষয়ের গুরুত্ব অনুযায়ী স্টাডি প্ল্যান তৈরি করা।
আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য: লিখিত পরীক্ষায় সাফল্য পেতে ধৈর্য ও নিয়মিত চর্চার বিকল্প নেই।
আধ্যাত্মিক প্রশান্তি: মানসিক প্রশান্তি ও আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শেষ কথা
ব্যাংক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও নিরবচ্ছিন্ন অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত পড়াশোনা এবং বিগত সালের প্রশ্ন অনুশীলন করলে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হওয়া সম্ভব। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন, বেশি বেশি সৃষ্টিকর্তাকে ডাকুন। নিশ্চিত তিনি আপনাকে সর্বোত্তম রিজিকের ব্যবস্থা করে দিবেন।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম