
অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পরিচালিত অভিযানে প্রায় ২০৭ কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এক মাসে জব্দকৃত এসব পণ্যের আনুমানিক মূল্য ২০৬ কোটি ৪২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
রবিবার বিজিবির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অক্টোবর মাসে বিজিবি সীমান্তবর্তী এলাকায় নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বিপুল পরিমাণ চোরাচালান পণ্য উদ্ধার করে। এসব পণ্যের মধ্যে ছিল ৩ কেজি ২৬২ দশমিক ৭৬ গ্রাম স্বর্ণ, ১১ কেজি ৪১০ গ্রাম রূপা, ৩৩ হাজার ৯১০টি শাড়ি, ১৯ হাজার ৫৮০টি থ্রিপিস, শার্টপিস, চাদর ও কম্বল, ১৬ হাজার ৯৯১টি তৈরি পোশাক, ৫৬৯ মিটার থান কাপড় এবং ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৪৬টি কসমেটিকস সামগ্রী। এছাড়া জব্দ তালিকায় রয়েছে ৬ হাজার ২২৭ পিস ইমিটেশন গহনা, ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৫২৬টি আতশবাজি, ৬ হাজার ৫২ ঘনফুট কাঠ, ৪ হাজার ৫৮৯ কেজি চা পাতা, ১০ হাজার ৩৯২ কেজি সুপারি, ৩১ হাজার ৬৫১ কেজি কয়লা এবং ৫৩৫ ঘনফুট পাথর।
অভিযানে আরও উদ্ধার করা হয় ৩৭ হাজার ৩৫৫ কেজি সুতা বা জাল, ২৫১টি মোবাইল, ৩১ হাজার ৬৭৮টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৪৮ হাজার ২৮৬টি চশমা, ৪০ হাজার ৮২৬ কেজি জিরা, ৯ হাজার ৯১৪ কেজি চিনি, ২৬ হাজার ৪৫৮ কেজি পেঁয়াজ, ৬০১ কেজি রসুন, ৫ হাজার ৩৭৮ প্যাকেট বীজ, ৭ হাজার ৬৯০ কেজি সার ও ৫ হাজার ২৪ প্যাকেট কীটনাশক। এছাড়া উদ্ধারকৃত অন্যান্য সামগ্রীর মধ্যে ছিল ৩ হাজার ২ লিটার ডিজেল, ১ লাখ ৯ হাজার ৭৩২ পিস চকলেট, প্রায় দেড় হাজার গরু-মহিষ, ১০টি ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যান, ২১টি পিকআপ বা মহেন্দ্র, ২টি ট্রাক্টর, ৪টি প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস, ৯টি ট্রলি, ১৯৭টি নৌকা, ৩২টি সিএনজি বা ইজিবাইক, ৪৯টি মোটরসাইকেল ও ৩০টি বাইসাইকেল বা ভ্যান।
অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার সম্পর্কেও বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, অভিযানে ৪টি দেশীয় পিস্তল, ১টি রিভলভার, ৩টি মর্টার সেল, ৬টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ৩টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি, ২৫০ গ্রাম বিস্ফোরক, ২টি ডেটোনেটর ও ৭টি অন্যান্য অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
বিজিবি জানিয়েছে, অক্টোবরে সীমান্ত এলাকায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যও উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ছিল ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৬২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩ কেজি ২০৫ গ্রাম হেরোইন, ৫ হাজার ৪৬৫ বোতল ফেনসিডিল, ১০ হাজার ৫৮২ বোতল বিদেশি মদ, ২৫১ দশমিক ৫ লিটার দেশি মদ, ১ হাজার ২৬৭ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৭৮২ কেজি ২৪০ গ্রাম গাঁজা এবং ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৯ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে ৫৫ হাজার ৯১৭টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট বা ইনজেকশন, ৪ হাজার ৮২ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৬ হাজার ৩০৯টি এ্যানেগ্রা বা সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ১৩০ কেজি ইয়াবা পাউডার এবং ৭ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৮ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট।
অভিযান চলাকালে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক চোরাচালানে জড়িত অভিযোগে ১৮৪ জনকে আটক করা হয়। পাশাপাশি সীমান্ত অতিক্রমের অপরাধে ২১০ জন বাংলাদেশি ও ৩ জন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় আটক ৪৯৩ জন মিয়ানমার নাগরিককে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।