
জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি বিশেষ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির ভোট ও গণভোট দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে যাচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নির্বাচনী আয়োজন ভোটারদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা হবে, যা জাতির স্মৃতিতে গৌরবের অংশ হিসেবে জায়গা করে নেবে।
বুধবার ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ বক্তব্য দেন।
ড. ইউনূস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাস ডিসেম্বর সবসময়ই বাঙালির জন্য গর্বের। শহীদ বীরদের পাশাপাশি স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের কথাও তিনি স্মরণ করেন। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে জীবন উৎসর্গকারীদের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা রইল। এ সময় তিনি বলেন, “গ্র্যাজুয়েশনের এই আনন্দময় মুহূর্তে আসুন আমরা আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বাংলাদেশের সব মানুষের পক্ষে আল্লাহর কাছে দোয়া করি।”
স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজকের এই অর্জন তাদের পেশাগত জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। জাতীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত জটিল বিষয়, নীতিনির্ধারণ, রাষ্ট্রীয় কৌশল এবং জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা পালনের জন্য তারা এখন আরও প্রস্তুত। তিনি বলেন, এই বছরের পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় তাদের সামনে উচ্চতর দায়িত্ব পালনের পথ খুলে দিয়েছে।
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের উদ্দেশ্য উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় এগিয়ে থাকতে সক্ষম নেতৃত্বই ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালনায় বড় ভূমিকা রাখবে। অর্থনৈতিক শক্তির কেন্দ্র এশিয়ায় সরে আসায় বাংলাদেশ এখন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে এবং এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর দায়িত্ব আগামী দিনের নেতাদের ওপর বর্তায়।
তিনি আরও বলেন, সামরিক কৌশল থেকে শুরু করে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যে গভীর আলোচনা ও মূল্যায়নে অংশ নিয়েছেন, তা প্রশংসার দাবি রাখে। সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সাইবার হুমকির মতো বর্তমান বিশ্বের জটিল নিরাপত্তা পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
নিজ বক্তৃতার শেষাংশে ড. ইউনূস সশস্ত্র বাহিনীর অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে তুলে ধরেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা কিংবা মহামারির সময় তাদের কার্যকর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, দেশের প্রতি তাদের অঙ্গীকার অনুকরণীয়। পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও উজ্জ্বল করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।