আব্দুল হামিদের পালিয়ে যাওয়া সরকারের সিগন্যালে হয়েছে: নুর
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৯:৪৫ পিএম, ০৮ মে ২০২৫

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিন থেকে আজকে আব্দুল হামিদের পালিয়ে যাওয়া সবকিছু সরকারের সিগন্যালে ও মধ্যস্থতায় হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের ৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, আমরা বারবার বলেছি, দেশের এই বাস্তবতায় আমরা একটা রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যেতে চাই। সেখানে সবার সমর্থন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করুন। কিন্তু, এটা করা হয়নি। ক্রমাগতভাবে যেসমস্ত উপদেষ্টাদের অন্তর্বর্তী সরকারে নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অন্তত ৫ জন আছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অন্তত আরও ৫ জন উপদেষ্টা আছে, যারা বিদেশি অ্যাম্বাসির মদদপুষ্ট। ফ্যাসিবাদের দোসর, বিদেশি মদদপুষ্ট এই উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে সংস্কার কী হবে?
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুরুর দিকে বলেছে— আমরা নির্বাচন চাই, নির্বাচনী রোডম্যাপ দেন। কেন তাদের মনের মধ্যে এই সন্দেহ সংশয় মনে হলো। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) যে পথে যাচ্ছেন এবং যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করছেন, সেটা আপনাদের জন্য ভালো হবে না এবং দেশের জন্যও ভালো হবে না। আপনারা ১/১১ এর মতো দেশকে সেই পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবেন। আপনারা যদি সংস্কার করতে চান, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপ দেন। জাতীয় সরকার ছাড়া আপনারা টিকতে পারবেন না।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র কম্প্রোমাইজ করা যাবে না উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, আমাদের ছাত্র নেতারা দু-একজন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ৫ আগস্ট যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই ঐক্যের নষ্টের মূল কারিগরদেরও একসময় জবাবদিহি করতে হবে। যদি একা একা ভেবে থাকেন যে আপনারা এই বিপ্লব উদ্ধার করে ফেলেছেন, যা ইচ্ছা তা করবেন আর জনগণ মেনে নিবে, পরিস্থিতি সবসময় অনুকূলে থাকবে না। তাই সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আগামীর গতিপথ ঠিক করতে হবে।
ছাত্র প্রতিনিধিরা এখন জেলা-উপজেলায় মন্ত্রীদের চেয়েও পাওয়ারফুল মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানের পরেও আমরা যতই নতুন বন্দোবস্ত ও নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলছি, কিন্তু সবকিছুই চলছে পুরোনো ধারায়। কোনও জায়গায় খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। প্রশাসন এখনও নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করছে না। বর্তমানে একটা নব্য আধিপত্যবাদী দাঁড়িয়ে গেছে তথাকথিত ছাত্র সমন্বয়কেরা।
নুর বলেন, ড. ইউনূস নিজে বলেছেন ছাত্ররা তার নিয়োগকর্তা। তারা যতদিন চায় তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। ছাত্ররা কেন বলেনি, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করলে আপনাকে (ড. ইউনূস) ক্ষমতায় বসাবো না। সরকারে দুজন ছাত্র উপদেষ্টা আছে। সরকারের সবচেয়ে ভারী মিনিস্ট্রি হলো এলজিআরডি। সেখানে একজন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এলজিআরডি মিনিস্ট্রি তো দূরের কথা, যার নূন্যতম মিনিস্ট্রি সম্পর্কে ধারণা নেই, প্রত্যেকটি দায়িত্বের কাজ তাদের লোকজন ছাড়া আর কেউ পাচ্ছে না।
আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।