
এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা টানা এক সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত আছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ও বিশিষ্ট হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নুরুদ্দীন আহমদ বলেন, “ম্যাডামের অবস্থা অপরিবর্তিত। আগের মতোই আছেন। উন্নতি বা অবনতি বলা যাচ্ছে না।”
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার খালেদা জিয়ার শারীরিক খোঁজ নিতে হাসপাতালে যান। তার একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানান, “ম্যাডামকে দেখতে গিয়ে উনি সিসিইউ’তে প্রবেশ করেন। খালেদা জিয়া কিছুটা ইশারায় সাড়া দিয়েছেন।” ফরিদা আখতার ১টা ৩৮ মিনিটে হাসপাতালে প্রবেশ করেন এবং ১টা ৫০ মিনিটে বের হন। এই সময়ে তিনি চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
মেডিক্যাল বোর্ডের আরেকজন চিকিৎসক সময়কে বলেন, “ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল। কিছুটা রেসপন্স করছেন। ডাক দিলে কিছুটা সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এটাকে আশানুরূপ উন্নতি বলা যাবে না। শারীরিক প্যারামিটারগুলো ওঠানামা করছে।”
প্রতি রাতেই বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশি-বিদেশি অন্তত দেড় ডজন চিকিৎসক অংশ নেন। লন্ডনের চিকিৎসকরাও ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকেন। বৈঠকের পর নতুন পরীক্ষা ও রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসা পরিবর্তন করা হয়।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিল ঢাকায় পৌঁছেছেন। তিনি বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। প্রথমে একটি হোটেলে অবস্থান করার পর দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন আগেই জানিয়েছেন, তিনি চিকিৎসায় যুক্ত থাকবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শে ভর্তি রাখা হয়। ২৭ নভেম্বর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। দেশে-বিদেশের চিকিৎসকরা তৎপরভাবে তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। চীনের ১০ সদস্যের চিকিৎসক টিমও বোর্ডের সঙ্গে কাজ করছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কাতার, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ভারত চিকিৎসা সহায়তা জানিয়েছে।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়েও মেডিক্যাল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। তাঁর উপদেষ্টা এম. এ. মালিক জানিয়েছেন, কাতার সরকার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রেখেছে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে লন্ডনে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। প্রায় চার মাসের চিকিৎসার পর ৬ মে দেশে ফেরেন।