দেশে এল তারেক রহমানের ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার গাড়ি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যবহারের জন্য বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন একটি বিদেশি ‘হার্ড জিপ’ দেশে পৌঁছেছে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো এলসি ২৫০ মডেলের এই গাড়িটি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নামে নিবন্ধিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস অনুমোদন দেয়।

বিআরটিএ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সাদা রঙের সাত আসনের এই গাড়িটি চলতি বছর জাপানে তৈরি হলেও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা হয়েছে। আমিরাতের ‘ভেলোস অটোমোটিভ এক্সপোর্টিং এলএলসি’ থেকে এটি ঢাকার তেজগাঁও-স্থিত ‘এশিয়ান ইমপোর্টস লিমিটেড’ আমদানি করেছে। ১ নভেম্বর চট্টগ্রামের ‘মা এসোসিয়েটস’- এর মাধ্যমে গাড়িটি দেশে প্রবেশ করে।

দাম ও শুল্ক-কর:

আমদানির বিল অব এন্ট্রির তথ্য অনুযায়ী, ২,৮০০ সিসি ইঞ্জিন বিশিষ্ট গাড়িটির কেনা মূল্য ৩৭ হাজার মার্কিন ডলার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৪১ পয়সা হারে শুল্কায়ন করেছে। এতে গাড়িটির ভিত্তিমূল্য দাঁড়ায় ৪৫ লাখ ২৯ হাজার ১৭০ টাকা। তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ হিসাব করেছেন অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ৪১ হাজার ডলার।

গাড়ি খালাস করতে শুল্ক, ভ্যাট ও অন্যান্য কর বাবদ সরকারকে দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার ৯৪২ টাকা। সব মিলিয়ে গাড়িটির মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার ১১২ টাকা।

নিবন্ধন ও ফিটনেস:

বিআরটিএ নিশ্চিত করেছে, গাড়িটি কোনো ব্যক্তির নয়, বরং ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র নামে নিবন্ধিত হয়েছে। নিবন্ধনে মালিকের ঠিকানা হিসেবে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ‘২৮/১ নয়াপল্টন’ উল্লেখ করা হয়েছে। গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ‘ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৬-৬৫২৮’।

রেজিস্ট্রেশনের দিনই (২ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক সাবিকুন নাহার গাড়িটির ফিটনেস সনদ অনুমোদন করেন। ফিটনেসের মেয়াদ ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ট্যাক্স টোকেন এক বছরের জন্য, যা আগামী ১ ডিসেম্বর শেষ হবে। বিল অব এন্ট্রির তথ্যমতে গাড়িটির সাধারণ ওজন ২,৭৯০ কেজি এবং সর্বোচ্চ ওজন ৩,০৮৫ কেজি।

নভেম্বরের মাঝামাঝি রাজধানীর তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোডে অবস্থিত এশিয়ান ইমপোর্টস লিমিটেডের শো-রুমে গাড়িটি দেখা গিয়েছিল। শো-রুমের কর্মচারীরা গাড়ির ছবি তুলতে বাধা দেন এবং গাড়িটি কার জন্য আনা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বাচনী প্রচারণার নিরাপত্তার স্বার্থে দলটিকে দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে একটি গাড়ি জুনে এবং আরেকটি অক্টোবর মাসে অনুমোদন পেয়েছিল। তবে সদ্য নিবন্ধিত এই জিপটি বুলেটপ্রুফ কি না, তা এখনও দালিলিকভাবে নিশ্চিত হয়নি।