
শুধু রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিককে অর্থনীতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দিতে হবে। অর্থনীতিতে কোনো একক গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে পরিচালনা করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আমরা জনঅধিকার পার্টি আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ১ম বর্ষ যুগপৎ আন্দোলন শরিক দল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, “প্রত্যেকটি নাগরিক যাতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার ভূমিকা রাখতে পারে সেই চিন্তা করছি। এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নাগরিকদের যখন আয় বাড়বে তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়বে তখনই তারা সুনাগরিক হবে। তারা ট্যাক্স দেবে। তখন ট্যাক্সের টাকা দিয়ে দাবি করতে পারবে, আমার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এটা করা যাবে না, আমার টাকায় সেটা করা যাবে না। আমার ট্যাক্সের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলন নিয়ে কোনো ব্যক্তি বা দলের কৃতিত্ব নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এটি দেশের সকল মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“বাংলাদেশের মালিক জনগণ, তারা সিদ্ধান্ত নেবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের সংস্কৃতি বদলাতে হবে। সহনশীল হতে হবে। মতভেদ থাকলেও অন্যের মতের প্রতি সম্মান জানাতে শিখতে হবে,” বলেন আমীর খসরু।
তিনি অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনা কিছু কিছু ক্ষুদে স্বৈরাচার রেখে গেছেন।” তার মতে, “জনগণের সমর্থন নিয়ে সংসদে পাশ করুন, এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। সেটা না করে যদি কেউ বলে আমাদের এই দাবি না মানলে নির্বাচন করবো না অথবা আমরা আন্দোলন করবো, এটা হচ্ছে অগণতান্ত্রিক।”
আলোচনায় তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে, বিপ্লব-পরবর্তী দেশগুলোতে যারা দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে, তারা উন্নতির পথে এগিয়েছে। কিন্তু যারা তা করেনি, সেসব দেশে বর্তমানে সমাজ বিভক্ত, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং কোথাও কোথাও গৃহযুদ্ধ চলছে।
“আমাদের এক বছর অলরেডি অতিরিক্ত হয়ে গেছে,” বলেন আমীর খসরু। “যত তাড়াতাড়ি জনগণের ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা, মুক্ত চিন্তা কিছুই থাকবে না। দিনের শেষে দেখবেন, একটা সাংঘর্ষিক জাতি হিসেবে আমরা একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধ করছি।”