
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে ইসলামি বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইরাক। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি মনে করেন, গাজা ও কাতারে ইসরায়েলি হামলার জবাবে মুসলিম দেশগুলোর একটি সম্মিলিত সামরিক জোট গঠনের এখনই সময়।
আসন্ন আরব-ইসলামিক সম্মেলনের ঠিক আগে, কাতারের রাজধানী দোহায় দেওয়া তার এই বিবৃতি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ তথ্য প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরাকি প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে গাজা এবং কাতারে চালানো সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে এমন উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়েছে।
সুদানি বলেন, গত মঙ্গলবার দোহায় ইসরায়েলের চালানো বিমান হামলায় হামাসের পাঁচজন সদস্য এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনাকে তিনি “আন্তর্জাতিক আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন” হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এটি গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুসলিম দেশগুলো নিজেদের রক্ষার জন্য যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করতে পারবে না; এমন কোনো কারণ নেই।” তিনি একইসঙ্গে আরব ও ইসলামি দেশগুলোকে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিকভাবে একে অপরের অংশীদার হতে আহ্বান জানান।
সুদানির এ বক্তব্য এমন এক সময় এলো, যখন কাতারে ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর জরুরি আরব-ইসলামিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই সম্মেলনে কাতারে ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়া এবং বহু বছর ধরে আলোচনায় থাকা যৌথ আরব সামরিক বাহিনী গঠনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় আলোচনায় আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রায় এক দশক আগে মিসর এই উদ্যোগের প্রস্তাব দিয়েছিল।
সুদানি আরও বলেন, ইসলামি বিশ্বের হাতে ইসরায়েলকে থামানোর জন্য “অসংখ্য উপায়” রয়েছে। তিনি সতর্ক করেন, ইসরায়েলের “আগ্রাসন কাতারে থেমে থাকবে না।” তার মতে, গাজায় দীর্ঘ সময় ধরে চলমান হত্যাযজ্ঞই এর বড় প্রমাণ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ইসরায়েল যে দোহার আবাসিক এলাকায় হামলা চালায়, সেখানে তখন হামাস নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এই হামলা শুধু প্রাণহানি ঘটায়নি, বরং নতুন করে কূটনৈতিক অচলাবস্থাও তৈরি করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৪ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি।