
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা আগ্রাসনে যে বিপুল প্রাণহানি ঘটেছে, তার মধ্যে প্রায় ছয়জনের পাঁচজনই সাধারণ বেসামরিক মানুষ। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিটের গোপন নথি থেকেই উঠে এসেছে এই ভয়াবহ তথ্য, যা আধুনিক বিশ্বে সংঘটিত যেকোনো যুদ্ধে বেসামরিক প্রাণহানির দিক থেকে নজিরবিহীন।
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের ১৯ মে পর্যন্ত ইসরায়েলি গোয়েন্দারা যে হিসাব সংরক্ষণ করেছে, তাতে দেখা যায়—হামাস ও ইসলামিক জিহাদের প্রায় ৮ হাজার ৯০০ যোদ্ধা নিহত অথবা ‘সম্ভাব্য নিহত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, উপত্যকায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা ৫৩ হাজারে পৌঁছেছে, যেখানে সামরিক ও বেসামরিক উভয় শ্রেণির মানুষ রয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েলি ডাটাবেজে যাদের সশস্ত্র যোদ্ধা হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের সংখ্যা বিবেচনায় দেখা যাচ্ছে, মোট নিহতের মাত্র ১৭ শতাংশ যোদ্ধা, আর বাকি ৮৩ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক।
এই পরিসংখ্যান শুধু ভয়াবহই নয়, একে গণহত্যার আলামত হিসেবে উল্লেখ করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। সিরিয়া বা সুদানের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতেও দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে এত বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ নিহত হয়নি যতটা হয়েছে গাজায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছে এবং এর দায় ইসরায়েল এড়াতে পারে না।
গণহত্যা বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী এবং এমনকি ইসরায়েলি শিক্ষাবিদরাও মনে করছেন, গাজায় যা চলছে তা একটি গণহত্যা। গার্ডিয়ান জানায়, বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা নিজেদের গোয়েন্দা ইউনিটের এই গোপন তথ্যের সত্যতা অস্বীকার করেছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান