
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম অভিযোগ করেছেন, ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল আন্দোলনকারীরা। তার দাবি, সেই সময় শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখেছিল তারা।
বুধবার (৬ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে শিবিরের আয়োজনে তিনদিনব্যাপী চলমান প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিনে “জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র রাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন” শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার একই স্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের ছবি প্রদর্শন ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সেই বিতর্কিত উপস্থাপন সরিয়ে শিবিরের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার যুদ্ধাপরাধ-সংক্রান্ত বক্তব্য ও স্কাইপ কেলেঙ্কারির তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
আলোচনা সভায় আবু সাদিক কায়েম বলেন, যারা আমাদের শত্রু মনে করে তারা আগের ধারার ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে, যেটা পুরো ছাত্রসমাজকে অনেক বেশি হতাশ করছে। বিগত সময়ে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা ছিল, হাসিনাকে যারা হাসিনা বানিয়েছে, তারাই এখন বিরোধিতা করছে।
তিনি আরও বলেন, যারা ২০১৩ সালে শাহবাগ কায়েম করে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মব কালচারের সূচনা করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, আয়নাঘর এবং শাপলা গণহত্যার বৈধতা উৎপাদন করেছে, তারাই এখন আবার মব তৈরি করছে।
ভারতের প্রভাব বিস্তার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এই শিবির নেতা। তার ভাষায়, তারা ভারতের আধিপত্যবাদকে বাংলাদেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এবং বাংলাদেশের মানুষের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতিকে বিনাশ করে এখানে ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতিকে এস্টাবলিশ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। জুলাইয়ের শহীদদের ইমাম আবু সাঈদ এই কালচারাল ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত কথা বলে গেছেন।
সাদিক কায়েম আরও বলেন, ২০১৩ সালেই স্বৈরাচারী হাসিনার পতন ঘটতো। কিন্তু এই শাহবাগীরা নানা বয়ান উৎপাদন করে তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। যার ফলে ২০২৪-এ এসে দুই হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে তাকে ক্ষমতা থেকে নামতে হয়েছে। দুই হাজার শহীদের মৃত্যুর দায় হাসিনার পাশাপাশি শাহবাগীদেরও নিতে হবে।
আলোচনায় তিনি বর্তমান ছাত্র রাজনীতির গতিধারাকেও হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন এবং ‘আসল নেতৃত্ব’ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।