
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনে অংশ না নিলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে একতরফা নির্বাচন করলেও এবার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন একপক্ষীয় হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তার ভাষায়, বিএনপির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতিটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো প্রার্থী নেই। সব দল একত্র হলেও বিএনপির বিপক্ষে ১০০ প্রার্থী দেওয়া কঠিন হবে।
ফুয়াদের মতে, বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ হলো দলটির অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহী প্রার্থী সমস্যা। ১৩০-১৩৫ আসনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে, যারা একে অপরের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী, বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। কিছু প্রস্তাব যেমন নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০ করা, অন্তত ৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নারীদের মনোনয়ন দেওয়া, বা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই টার্মে সীমিত করা এগুলো ২০৩১-৩২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি উঠেছে।
এবি পার্টির এই নেতা মনে করেন, সব দল নির্বাচনে গেলেও ভোট একতরফা জয়ে শেষ হতে পারে। তবে বড় টেনশনের জায়গা হচ্ছে জামায়াত ও চরমোনাই, যারা বিএনপির পর সবচেয়ে বড় দল হিসেবে সংসদে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে। যদি তারা এই দাবিতে অনড় থেকে নির্বাচন বর্জন করে, আর এনসিপিও একই অবস্থান নেয়, তাহলে পরিস্থিতি একতরফা নির্বাচনের দিকে যাবে।
ফুয়াদ বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির জন্য অপশন থাকবে যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগীদের বিরোধী দলে নেওয়া। তবে সেটি দলের ও দেশের জন্য কতটা সম্মানজনক হবে সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ।
তিনি সতর্ক করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি সব রাজনৈতিক শক্তিকে নিয়ে ভালো নির্বাচন আয়োজন না করে, তবে ড. ইউনূস দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারেন। তিনি এর আগে কয়েকবার দায়িত্ব ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এবারও হয়তো নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে বিদায় নিতে পারেন।
তবে ব্যারিস্টার ফুয়াদ মনে করেন, সব সমস্যার সমাধান সম্ভব যদি বিএনপি প্রয়োজনীয় ত্যাগ স্বীকার করে এবং নেতৃত্ব প্রদর্শন করে। তার ভাষায়, কারণ, অন্যরা যা অর্জন করতে পারবে না, বিএনপি না করলে ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিএনপিই।