এস আলমের নাগরিকত্ব ত্যাগের আদেশ স্থগিত, হাইকোর্টের রুল জারি

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব স্বেচ্ছায় ত্যাগের বিষয়ে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের (এস আলম) নেওয়া সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে কেন আইনের মুখোমুখি করা হবে না—এ বিষয়ে কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজীউদ্দিন আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ ইসলামী ব্যাংক কর্তৃক দায়ের করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ব্যাংকের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম।

তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে ইসলামী ব্যাংক থেকে ভুয়া নামে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে এস আলমের বিরুদ্ধে। পরে এসব মামলার জবাবদিহি এড়াতে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে সিঙ্গাপুরের পাসপোর্ট নেন। অভিযোগ রয়েছে—তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছেন যাতে করে তার কাছ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ব্যাংক ফেরত আদায় করতে না পারে।

আইনজীবীর ভাষ্য, সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণের পর ওই অর্থ রক্ষায় এস আলম আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হন। এ অবস্থায় অর্থ উদ্ধারের স্বার্থে ইসলামী ব্যাংক হাইকোর্টে রিট দায়ের করলে আদালত আদেশ ও রুল জারি করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে এস আলমকে নাগরিকত্ব ত্যাগসহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছিল। এতে তার অর্থপাচারের পথ সহজ হওয়ার পাশাপাশি জবাবদিহি এড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ব্যাংকিং খাতে প্রভাব বিস্তারের পর এস আলম ও তার পরিবার ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন। ওই দিনই এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তিন ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলম মাহিরের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। একই দিনে তারা বিদেশি নাগরিক হিসেবে দেশে স্থায়ী বসবাসের অনুমতিও পান, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে মঞ্জুর করে।