
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার, যিনি জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, এবার ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাসারসহ কয়েকজন তারকার ছবিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।
উল্লেখ্য, খায়রুল বাসার নিজেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। এই পরিস্থিতিতে তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক দীর্ঘ বার্তায় নিজের অবস্থান তুলে ধরেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কিছু প্রশ্ন ছুড়েন।
তিনি লেখেন, ‘আজ নাকি আমার ক্যাম্পাসে আমাদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ হবে? এই চোরের রাষ্ট্রে, এই বাটপারের রাষ্ট্রে আমি কোন আপরাধে? আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলেছি যুগ ধরে তাই? শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছি তাই?’
তিনি আরও লেখেন, ‘ওকে, আমার ভাইয়েরা; আমার ক্যাম্পাসের প্রিয় অনুজ, আমার ছবিটা বড় করে প্রিন্ট করো এবং সবচেয়ে পচা জুতাটা নিক্ষেপ করো। আমি হাসি মুখে গ্রহণ করছি। কারণ, আমি বুঝেছি তোমরা রাজনৈতিক হয়েছো, তোমরা তোমাদের ইগো এবং তোমাদের আলাদা লক্ষ্যে নেমেছো! সেখানে মানুষ, সেখানে সাধারণের আবেগ অভিভূতি তোমাদের বিবেচনার বিষয় না! তোমরা কেবল ক্ষমতার না এবং ক্ষমতার দাস না, তোমরা নিজের, দেশের এবং দায়িত্বের; এ বিশ্বাস আমার ভাঙতে যাচ্ছে, ভাঙুক! আমি এমন কি আর লোক? ভালোবাসা এবং শুভকামনা তোমাদের জন্য তোমরা এদেশের প্রকৃতি, ঐতিহ্য এবং মানুষের হও এই কামনা।’
১৫ আগস্ট সকালে সামাজিক মাধ্যমে খায়রুল বাসার একটি পোস্ট শেয়ার করেন যেখানে তিনি আল মাহমুদের একটি কবিতার কিছু চরণ তুলে ধরেন: ‘‘সে যখন বললো, ‘ভাইসব।’ অমনি অরণ্যের এলোমেলো গাছেরাও সারি বেঁধে দাড়িয়ে গেল। সে যখন ডাকলো ‘ভাইয়েরা আমার।’ ভেঙে যাওয়া পাখির ডাক নেমে এলো পৃথিবীর ডাঙায়।’’
পোস্টের শেষাংশে বাসার শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধুকে। তিনি নির্মলেন্দু গুণের ‘বাংলার ধ্রুবতারা’ কবিতার অংশ উদ্ধৃত করেন:
‘‘শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে / রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে / অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন / তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল / হৃদয়ে লাগিল দোলা / জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার / সকল দুয়ার খোলা / কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?/ গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তার অমর-কবিতাখানি / ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’/ সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’’