
গাজার শহরটি পুরোপুরিভাবে ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রধান রাস্তাগুলোতে ট্যাঙ্ক দিয়ে পথ বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বহু মানুষকে শহর ছেড়ে যেতে দেওয়া হলেও ফিরে আসতে দেয়া হচ্ছে না—এই ছবিই দেখা যাচ্ছে উপত্যকায়। আল-জাজিরার লাইভ রিপোর্টে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এমনটাই জানানো হয়েছে।
রিপোর্ট বলছে, গাজার প্রধান সড়কে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক ও জওয়ানরা অবরুদ্ধতার চিহ্ন স্থাপন করেছে। শহর ছাড়িয়ে যাওয়া লোকজনকে ফিরে আসতে বাধা দিচ্ছে সৈন্যরা; বিশেষ করে যারা খাবারের সন্ধানে বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন তাদের নিয়েই কঠোর আচরণ দেখানো হচ্ছে।
এ ঘটনার মধ্যেই আসে খবর—ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাব বিশ্লেষণ করছে, ঠিক তখনই উপত্যকাটি 'সিল' করে দেওয়া হলো। আল-জাজিরার বরাত অনুযায়ী শহরের দক্ষিণাঞ্চলে রাস্তা বালির বাধা ও সামরিক বাহিনী স্থাপন করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কাটজ এই পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করে বলেছেন, অব্যাহত পূর্ণাঙ্গ অভিযানের মুখে গাজার বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার এবং শহরে হামাস কর্মীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্য এটিই শেষ সুযোগ।
কাটজ আরও যোগ করেন যে, যারা সরে গেলে তাদেরকে সৈন্যরা যাচাই-বাছাই করবে।
গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর হোয়াইট হাউস ২০ দফা প্রস্তাব পরিচিত করায় আলোচনায় এসেছে। প্রস্তাবটি অনুযায়ী গাজায় একটি অস্থায়ী টেকনোক্র্যাট সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে এবং উপত্যকাটি ইসরায়েল দ্বারা সংযুক্ত করা হবে না; কাউকে গাজা ছাড়তে বাধ্য করা হবে না; এবং গাজা পুনর্নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষ সম্মত হলে যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হবে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত ও মৃত সকল বন্দীকে ফিরিয়ে আনা হবে; ৭ অক্টোবর ২০২৩-এর পর থেকে গাজা থেকে আটক ২৫০ জন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দী এবং ১৭০০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবে—এমন শর্তও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রস্তাবটি বাস্তবায়নকালে ইসরায়েলি সামরিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে স্থগিত থাকবে যাতে পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তুতি নেওয়া যায়; শান্তিচর্চায় অংশগ্রহণকারী হামাস সদস্যরা সাধারণ ক্ষমা পাবে এবং অন্যদের গ্রহণকারী দেশে নিরাপদভাবে যেতে সুযোগ করে দেওয়া হবে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাহিনী নিরাপত্তা প্রদানে অংশ নেবে এবং তারা ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে; পাশাপাশি গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন পক্ষের মাধ্যমে সংলাপ সহজতর করা হবে।