
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ঘিরে উদ্বেগ বাড়তে থাকায় দেশটিতে অধ্যয়নরত ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (জেকেএসএ)।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সংগঠনটি জানায়, বিশেষ করে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে। এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। খবর দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
জেকেএসএর জাতীয় আহ্বায়ক নাসির খুয়েহামি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে প্রায় ৯ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এর মধ্যে চার হাজারের বেশি শিক্ষার্থী কাশ্মীর উপত্যকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, সংগঠনটি নিয়মিত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের কাছ থেকে উদ্বেগজনক ফোনকল ও বার্তা পাচ্ছে, যা পরিস্থিতির গভীর সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
খুয়েহামির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় অধ্যয়নরত কিছু শিক্ষার্থীকে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে পরিচয় গোপন রাখতে বলা হয়েছে, যা পরিস্থিতির গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করে। সাম্প্রতিক সময়ে এক ছাত্রনেতার মৃত্যু ও লিঞ্চিংয়ের ঘটনার খবর শিক্ষার্থী সমাজ এবং তাদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে হোস্টেল ও বাসস্থানে কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। চলাচলে নানা বিধিনিষেধ, অনিশ্চয়তা এবং সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তাদের মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে বাধ্য করছে। একই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত অভিভাবকেরা সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে জেকেএসএ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে।
এ ছাড়া পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে গেলে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে। সংগঠনটির মতে, সময়মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে এবং উদ্বিগ্ন পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসবে।