
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। এ সময় তার নিরাপত্তার বিষয়ে গুঞ্জন ছড়ালেও, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার (অব.) শামসুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, সরকার থেকে তার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) চাওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শামসুল ইসলাম বলেন, “তারেক রহমানের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করছে সরকার। যতটুকু নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে, তার চেয়ে বেশি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, রাজনৈতিক মহলে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুদিন ধরে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে তার মায়ের সংকটকালীন অবস্থায় দেশে না আসার কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত স্ট্যাটাসে নতুন করে নিরাপত্তা সম্পর্কিত আলোচনা তীব্র হয়েছে।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অভর্থ্যনা কমিটির আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমদ কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তার অসুস্থ মা খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “তারেক রহমান সবসময় জনদুর্ভোগ এড়াতে চায় এবং এমন কোনো কর্মসূচি সমর্থন করেন না যা সাধারণ মানুষের কষ্টের কারণ হতে পারে। সেই লক্ষ্যেই তিনি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ভিড় না করতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। বাংলাদেশেও তার আগমন উপলক্ষে যেন জনদুর্ভোগ না হয়, দলের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হাসপাতাল যাবেন, পিতার মাজার ও ভাইয়ের কবর জিয়ারত করতে চান।”
সরকারি ছুটির দিন দেশে ফেরার কারণ ব্যাখ্যা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জনদুর্ভোগ এড়াতে তিনি এমন দিন নির্বাচন করেছেন যেখানে পরপর দুইদিন সরকারি ছুটি রয়েছে, সব মিলিয়ে তিনদিনের ছুটি। তাই আমরা রাজধানীর কেন্দ্রীয় স্থানে কোনো জনসমাগমের আয়োজন করি নি।”
জনতার গণঅভ্যর্থনা নিয়ে তিনি জানান, “সাধারণ মানুষের আবেগ ও তার অনুরোধ অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত কম জনাকীর্ণ স্থানে গণঅভ্যর্থনা আয়োজন করা হয়েছে। এটি কোনো জনসভা বা প্রচলিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নয়। তারেক রহমানের ছাড়া এখানে কেউ বক্তব্য রাখবেন না। বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল যাওয়ার পথে তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন।”
সালাহউদ্দিন আহমদ সকল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে ধৈর্য্য ও শৃঙ্খলা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যতটুকু অসুবিধা হবে তার জন্য আমরা আগাম দুঃখ প্রকাশ করছি।”
বিএনপির নেতা জানান, আগামী ২৬ ডিসেম্বর বাদ জুমা শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। ২৭ ডিসেম্বর এনআইডি কার্ডের কাজ শেষে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত ও পঙ্গু হাসপাতালে যাবেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ আবারও নিশ্চিত করেছেন, “সরকার স্বপ্রণোদিতভাবে নিরাপত্তা দিচ্ছে। যতটুকু নিরাপত্তা থাকার প্রয়োজন, সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারের সকল সংস্থা কাজ করছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অভর্থ্যনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভী, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মওদুদ আলমগীর পাভেল এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা প্রধান ব্রিগেডিয়ার (অব.) শামস।