
নরসিংদী পৌর শহরের আরশীনগর মোড়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, যখন পুলিশ অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে অবৈধ টোল আদায়ের অভিযোগে দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেছিল। হামলাকারীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল এসপি, সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেনের ওপরও আক্রমণ চালিয়ে আটককৃত দুই ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। হামলা ঘটেছিল সকাল ১১টার দিকে, তবে হামলাকারীদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ জানায়, আরশীনগর স্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশা ও সিএনজি চালকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা অবৈধ। তাদের দাবি, স্ট্যান্ডের ইজারাদারের লোকজনই এই হামলার সঙ্গে জড়িত। অন্যদিকে, স্ট্যান্ডের ইজারাদার আলমগীর হোসাইন দাবি করেন, প্রায় ২৭ লাখ টাকা খরচ করে তিনি স্ট্যান্ড ইজারা নিয়েছেন এবং মারধরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি বলেন, “অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিজেই পড়ে ব্যথা পেয়েছেন। আমাদের ইজারা বৈধ, আমার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে।”
পুলিশের বরাত অনুযায়ী, শনিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আটজন পুলিশ সদস্য বীরপুর এলাকায় একটি লাশ উদ্ধারের পর ফেরার পথে আরশীনগর মোড়ে দেখা পান, কিছু ব্যক্তি রিসিটের বিনিময়ে অটোরিকশা ও সিএনজি চালকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। পুলিশ দুইজনকে আটক করলে পেছন থেকে অন্য চাঁদাবাজরা হামলা চালায়। হামলাকারীরা আনোয়ার হোসেনের ঘাড়, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং আটক দুইজনকে নিয়ে যায়। হামলার সময় আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। স্থানীয়রা আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. ফরিদা গুলশানা কবির জানান, আনোয়ার হোসেন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তার ঘাড় ও পায়ে রক্ত জমাট বেঁধেছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “বীরপুর থেকে ফেরার পথে দেখি কয়েকজন চলন্ত গাড়ি থেকে চাঁদা তুলছে। জিজ্ঞাসা করতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে ৪০-৫০ জন মিলে মব তৈরি করে আমার ওপর হামলা চালায়। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।”
তিনি আরও জানান, “হামলায় জড়িতরা আরশীনগর মোড়ের পাশে সিএনজি স্টেশনের ইজারাদারের লোকজন। তারা আটক দুইজনকে ছিনিয়ে নিয়েছে। হাইকোর্ট থেকেও রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধের নির্দেশনা আছে।”