
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, লন্ডনে সিজদা দিয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা সঠিক হয়নি। তার মতে, জনগণের কাছে সিজদা দেওয়াই ছিল দায়িত্ব। এখনও সময় আছে, ক্বিবলা পরিবর্তন করে জনগণের দিকে ফিরে আসা উচিত। দেশের চলমান সংকট নিরসনের একমাত্র উপায় গণপরিষদের নির্বাচন বলেও দাবি করেন তিনি। একইসাথে বিএনপির ৬০ শতাংশ জনসমর্থনের দাবি তিনি ‘আস্ফালন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক।
পাটোয়ারী অভিযোগ করেন, ঐকমত্য কমিশনও লন্ডন ও গুলশানে সিজদা করছে। একইসাথে তারা আবারও এক মাস সময় বাড়িয়েছে, যা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি দ্রুত ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠের সময় শহীদ পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত না করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের পাশে তাদের রাখা উচিত ছিল। সেনাবাহিনীকে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি দাবি করেন, অস্ত্র হাতে থাকলেও তারা এর ব্যবহার জানে না, সংবিধানের জ্ঞানও নেই। বরং বিদেশ ভ্রমণ করে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন। এমনকি আয়নাঘর বানানো নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বর্তমান সংবিধানকে ‘ফ্যাসিস্টদের তৈরি’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানান।
এনসিপির এই নেতা বলেন, অতীতে ব্যবসায়ীরা দালালি করেছে। তবে গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। একইসাথে কালেরকণ্ঠ পত্রিকার সমালোচনাও করেন।
চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তিনি আর জনসমক্ষে আসবেন না, প্রয়োজনে চা দোকান দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করবেন।
কিছুদিন আগে আমলা থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া একজনের মন্তব্যকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, তিনি বলেছেন স্বাধীনতার আগে গণপরিষদ নির্বাচন হয়েছে, তাই এখন দরকার নেই। মূলত তাদের মাথায় গুম-খুন ও দুর্নীতির চিন্তাই ঘুরপাক খায়।
আলোচনায় তিনি আরও বলেন, নেপাল, তুর্কি ও তিউনিসিয়ায় গণপরিষদ নির্বাচন হয়েছে। যারা আগে ডিসেম্বর নির্বাচন চাইতেন, এখন তারাই ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের কথা বলছেন। অথচ সংস্কার বা গণপরিষদ নির্বাচনের গুরুত্ব তারা বোঝেন না। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৮ সালের ১৭ এপ্রিল দ্বিতীয় ফরমানের মাধ্যমেও জিয়াউর রহমান গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছিলেন।
শেষে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী সংকট সমাধানে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।