
নেপালে বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের প্রশ্ন উঠেছে। এই মুহূর্তে রাজধানী কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া ‘জেন-জি’ গ্রুপ।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর অনলাইনে জেন-জি সমর্থকরা বালেন্দ্রকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করতে শুরু করেছেন।
গত সপ্তাহে নেপাল সরকার ফেসবুক, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়, যার ফলে কাঠমান্ডুতে ১৮ জনসহ মোট ১৯ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বালেন্দ্র শাহ আগে একজন রেপার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এরপর রাজনীতিতে প্রবেশ করে কাঠমান্ডুর মেয়র পদে নির্বাচিত হন। এখন তার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আন্দোলনের শুরু থেকেই বালেন্দ্র বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। তবে বিক্ষোভে যোগদানের বয়সসীমা ২৮ বছর নির্ধারণ থাকায় তিনি সরাসরি অংশ নিতে পারেননি। সমর্থন জানিয়ে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “এটি তরুণ প্রজন্মের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন, যাদের কাছে হয়তো আমাকেও বয়স্ক মনে হবে। আমি তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, লক্ষ্য এবং চিন্তাভাবনা বোঝার চেষ্টা করছি। রাজনৈতিক দল, নেতা, কর্মী, সাংসদ ও প্রচারকরা যেন এই সমাবেশকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার না করে।”
বালেন্দ্র জানিয়েছেন, “যদিও আমি সরাসরি আন্দোলনে উপস্থিত হতে পারছি না, জেন-জির প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন থাকবে।”
কে এই বালেন্দ্র শাহ?
বালেন্দ্র শাহ, যাকে বালেন নামেও ডাকা হয়, ১৯৯০ সালে কাঠমান্ডুতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নেপালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে ভারতের বিশ্বেশ্বরায়া টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
রাজনীতিতে আসার আগে বালেন্দ্র নেপালের আন্ডারগ্রাউন্ড হিপ-হপ জগতের র্যাপার ও গীতিকার ছিলেন। তার গানে প্রায়শই দুর্নীতি ও সামাজিক বৈষম্য নিয়ে বক্তব্য উঠে।
২০২২ সালে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচনে অংশ নিয়ে বড় দলগুলোর প্রার্থী পরাজিত করে ৬১ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হন।
সূত্র: NDTV