
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি অবৈধ ছাড়পত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, ভ্রান্ত পরিবেশ ছাড়পত্র কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) গাজীপুরের শ্রীপুরে বিশ্বব্যাংকের আয়োজিত তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আইন প্রয়োগ মানে শুধু জরিমানা নয়। এতে স্বচ্ছতা, বিকল্প ব্যবস্থা এবং জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে।
উপদেষ্টা প্রধান দূষণ উৎস ডাইং কারখানা, সিমেন্ট কারখানা ও ইটভাটাসহ অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সবচেয়ে দূষণকারী শিল্পগুলোকে চিহ্নিত করে বাজেট ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। দূষণকারীদের নাম প্রকাশ করুন। তথ্য উন্মুক্ত হলে জনগণ নিজেই রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।
রিজওয়ানা হাসান বন্যা প্রবাহ এলাকা বা পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল স্থানে বর্জ্য ফেলার অনুমতি দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের ছাড়পত্র অবৈধ ও দায়িত্বহীন। রাজনৈতিক চাপ থাকলেও আপত্তি জানাতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে বদলি হোন, কিন্তু পরিবেশের সঙ্গে আপস করবেন না।
উপদেষ্টা সকল লাল ক্যাটাগরির শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং জনগণের মতামত বিবেচনার ওপর জোর দেন। তিনি উদাহরণ হিসেবে একটি দূষণকারী সিরামিক কারখানাকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার ভুল কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং বলেন, দূষণকারীদের শাস্তি দিতে হবে, পুরস্কৃত নয়।
অপরাধ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনায় ডিজিটালাইজেশন, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ট্র্যাকিং এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর গুরুত্বের ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন।
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসম, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, বেস্ট প্রকল্পের পরিচালক একেএম রফিকুল ইসলাম এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বুশরা নিশাত বক্তব্য দেন।
সমাপনীতে উপদেষ্টা পরিবেশ অধিদপ্তরের সারাদেশ থেকে আগত কর্মকর্তাদের হাতে প্রশিক্ষণ সনদপত্র বিতরণ করেন।