
সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান হবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন-এ অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা-এর প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। এখন তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা, সেটা সরকার ও নির্বাচন কমিশন আইনি প্রক্রিয়ায়ই নির্ধারণ করবে। আর আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন কতটা অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, সেটা সময়ই দেখাবে।”
তিনি আরও জানান, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। “অন্তর্বর্তী সরকার আন্তরিকভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে। আশা করি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।”
নির্বাচনের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, “সবার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে দেশ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাবে।”
ড. মজুমদার আরও মন্তব্য করেন, বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু বিদ্যমান ব্যবস্থা তাকে স্বৈরাচারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাই নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় সংস্কারের প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা থাকলেও দল, প্রার্থী ও ভোটারদের দায়িত্বশীল ভূমিকা ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। কেন্দ্র দখল, প্রতিপক্ষের এজেন্ট বা ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে চার-চল্লিশ হাজার বডি ক্যামেরা কেনা হলেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।”
তিনি আরও সতর্ক করেন, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখনো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছায়নি। বিশেষ করে নির্বাচন পদ্ধতি ও জুলাই সনদ চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি সমাধান হয়নি। এর ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
হাসান আহমেদ বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বৈরাচার বিরোধী দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমানো, কাদা ছোড়াছুঁড়ির রাজনীতি বন্ধ করা ও শালীনতা বজায় রাখা জরুরি। কোনো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভেদ তৈরি হলে ফ্যাসিবাদের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।”
প্রতিযোগিতার ফলাফলেও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি-এর দল বিজয়ী হয়। বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ এবং সাংবাদিকরা—সাইদুর রহমান, জাকির হোসেন লিটন ও হুমায়ূন কবীর। বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।